নিজস্ব প্রতিবেদক : :
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশের আধুনিক সাংবাদিকতার পথপ্রদর্শক দৈনিক আজকের কাগজের প্রকাশক ও সম্পাদক, জেমকন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা কাজী শাহেদ আহমেদ আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সোমবার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বিশিষ্ট এই ক্রীড়া সংগঠক। তার মেজো ছেলে বাংলা ট্রিবিউন ও ঢাকা ট্রিবিউনের প্রকাশক কাজী আনিস আহমেদ এ তথ্য জানান।
আজকের বাংলাদেশে প্রকাশিত পত্রিকায় যে আধুনিকতার উপস্থিতি, তার শুরুই হয়েছিল কাজী শাহেদ আহমেদের সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘আজকের কাগজ’ পত্রিকার হাত ধরে, যা তৎকালীন মুক্তমত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।
১৯৪০ সালের ৭ নভেম্বর যশোরে কাজী শাহেদ আহমেদ জন্মগ্রহণ করেন। ইঞ্জিনিয়ারিং পাসের পর তিনি ১৪ বছর সেনাবাহিনীতে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি অ্যাকাডেমির প্রতিষ্ঠাকালীন প্লাটুন কমান্ডারদের একজন।
১৯৭৯ সালে ‘জেমকন গ্রুপ’ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তার ব্যবসায়ী জীবন শুরু। প্রকাশক ও সম্পাদক ‘খবরের কাগজ’ ও ‘আজকের কাগজ’। বাংলাদেশে প্রথম অর্গানিক চা বাগানের প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। তার রয়েছে অসামান্য কিছু অলাভজনক উদ্যোগ। এসব অলাভজনক উদ্যোগের মধ্যে আছে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ ও কাজী শাহেদ ফাউন্ডেশন।
সাহিত্য পরিমণ্ডলেও তিনি সুপরিচিত। কাজী শাহেদ আহমেদের প্রথম গ্রন্থ ‘আমার লেখা’। এটি ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত হয়। সে বছরই ‘ঘরে আগুন লেগেছে’ বইটিও প্রকাশিত হয়। ২০১৩ সালে তার ৭৩ বছর বয়সে প্রথম উপন্যাস ‘ভৈরব’ প্রকাশিত হয়। আত্মজীবনী ‘জীবনের শিলালিপি’ প্রকাশিত হয় ২০১৪ সালে। একই বছর প্রকাশিত হয় উপন্যাস ‘পাশা’। ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয় উপন্যাস ‘দাঁতে কাটা পেনসিল’। ২০১৮ সালে প্রকাশিত হয় উপন্যাস ‘অপেক্ষা’। ইতোমধ্যে ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে ‘ভৈরব’।
কাজী সাহেদ আহমেদের ছেলে কাজী আনিস ভাই ফেসবুকে লিখেছেন: অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে আমাদের পিতা কাজী শহীদ আহমেদ আজ সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে ইন্তেকাল করেছেন। তিনি একজন সৈনিক, নির্মাতা এবং মিডিয়া ও রাজনীতিতে একটি প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসাবে এক জীবনে বহু জীবন কাটিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির একজন প্রতিষ্ঠাতা কর্মকর্তা এবং ১৯৯০ এর দশকের অনেক প্রগতিশীল রাজনৈতিক আন্দোলনের পিছনে একজন প্রধান অভিনেতা ছিলেন। তিনি আজকের কাগজের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রিন্ট মিডিয়ার সংস্কৃতি পরিবর্তন করেন। দেশের একমাত্র জৈব চা এস্টেট প্রতিষ্ঠা করেন। এবং একটি উদার শিল্প বিশ্ববিদ্যালয়। সর্বোপরি তিনি ছিলেন প্রবল আবেগ, সততা ও অতুলনীয় সাহসের মানুষ। তিনি আমাদের জন্য একজন স্নেহময় পিতা এবং অগণিত অন্যদের জন্য একজন পৃষ্ঠপোষক বা পরামর্শদাতা ছিলেন। সর্বদা আশাবাদী, তিনি সর্বদা বাংলাদেশ এবং এর ভবিষ্যৎ নিয়ে বিশ্বাস করতেন। তিনি ক্রীড়া ও সংস্কৃতির একজন প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। এবং সবচেয়ে মজাদার এবং মজাদার ব্যক্তিদের মধ্যে একজন। আমরা তাকে ভয়ানকভাবে মিস করব। তবে সর্বোপরি, তাঁর অনুপ্রেরণার গল্প, উদযাপনের জীবন।
তার ইংরেজিতে আবেগঘন এই লেখা কাজী সাহেদ আহমেদ এর স্নেহ ধন্যদের মধ্যে শোকর ছায়া নেমে আসে।
কাজী সাহেদ আহমেদ জীবনী ঃ
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা জেমকন গ্রুপের চেয়ারম্যান কাজী শাহেদ আহমেদ আর নেই।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা, ক্রীড়া সংগঠক, প্রকাশক, লেখক ও জেমকন গ্রুপের চেয়ারম্যান কাজী শাহেদ আর নেই। আজ রাত ৭টা ১৫ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজেউন। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
কাজী শাহেদ আহমেদের জন্ম ১৯৪০ সালে, যশোরে। ইঞ্জিনিয়ারিং পাশের পর তিনি ১৪ বছর আর্মিতে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির প্রতিষ্ঠাকালীন প্ল্যাটুন কমান্ডারদের একজন। ১৯৭৯ সালে ‘জেমকন গ্রুপ’ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তাঁর ব্যবসায়ী জীবন শুরু।
কাজী শাহেদ আহমেদের তিন সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে কাজী নাবিল আহমেদ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ এবং বর্তমান সংসদ সদস্য। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি।
মেজ ছেলে কাজী আনিস আহমেদ খ্যাতিমান লেখক ও ইংরেজি ভাষার দৈনিক সংবাদপত্র ঢাকা ট্রিবিউন এবং বাংলা ভাষার অনলাইন সংবাদপত্র বাংলা ট্রিবিউন এবং সাহিত্য পত্রিকা বেঙ্গল লাইটস-এর প্রকাশক।
ছোট ছেলে কাজী ইনাম আহমেদ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক।
কাজী শাহেদ আহমেদ জীবনের বেশিরভাগ অংশজুড়ে তিনি নতুন ধরনের উদ্যোগ নিয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন। পত্রিকা, ব্যবসা কিংবাশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সবকিছুতেই নতুনত্বের ছোঁয়া তার হাত দিয়ে।
বাংলাদেশে প্রকাশিত পত্রিকায় যে আধুনিকতার উপস্থিতি তার শুরুই হয়েছিল কাজী শাহেদ আহমেদের সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘আজকের কাগজ’ পত্রিকার হাত ধরে। যা তৎকালীন মুক্তমত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।
কাজী শাহেদ প্রকাশক ও সম্পাদক ‘খবরের কাগজ’ ও ‘আজকের কাগজ’। বাংলাদেশে প্রথম অর্গানিক চা বাগানের প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর অলাভজনক উদ্যোগের মধ্যে আছে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ ও কাজী শাহেদ ফাউন্ডেশন। তাঁর স্ত্রী আমিনা আহমেদ একজন বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী।
লেখালেখিতেও কাজী শাহেদ আহমেদ সোনালি স্বাক্ষর রেখেছেন। তাঁর প্রবন্ধগ্রন্থ ‘ঘরে আগুন লেগেছে’ প্রকাশিত হয় ১৯৯৫ সালে। ২০১৩ সালে তাঁর তেয়াত্তর বছর বয়সে প্রথম উপন্যাস ‘ভৈরব’ প্রকাশিত হয়। আত্মজীবনী ‘জীবনের শিলালিপি’ প্রকাশিত হয় ২০১৪ সালে। একই বছর প্রকাশিত হয় উপন্যাস ‘পাশা’। ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয় উপন্যাস ‘দাঁতে কাটা পেনসিল’। ২০১৮ সালে প্রকাশিত হয় উপন্যাস ‘অপেক্ষা’। ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে ‘ভৈরব’ এবং প্রকাশের অপেক্ষায় আছে আত্মজীবনীর ইংরেজি অনুবাদ ও অন্যান্য গ্রন্থ।