বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশনের কোষাধ্যক্ষ এবং বক্ষব্যাধিবিশেষজ্ঞ ডা. আবদুস শাকুর খান জানান, অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টের রোগে বায়ুদূষণের প্রভাবই সবচেয়ে বেশি। দূষিত বায়ুর সঙ্গে নানা ধরনের বিষাক্ত উপাদান থাকে, যা ফুসফুসকে আক্রান্ত করে। এখন শুধু রাস্তাঘাটেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ নয়, বরং এর চেয়েও বেশি খারাপ অবস্থা আবদ্ধ পরিবেশের ফ্ল্যাট, বাসাবাড়ি কিংবা কর্মস্থলে। আমরা ঘরবাড়ি-কর্মক্ষেত্রে দরজা-জানালা বন্ধ রেখে গুমোট পরিবেশে বসবাস করছি। আলো-বাতাস প্রবাহের সুযোগ না রেখে দিনের পর দিন এমন জীবনযাপন শ্বাসতন্ত্রের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
এ বছর বিশ্ব ফুসফুস দিবস উদ্যাপন কমিটির চেয়ারম্যান ডা.আবদুস শাকুর খানের দেওয়া তথ্যমতে, বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশন ঢাকা ক্লাবে আয়োজন করছে দিনব্যাপী কার্যক্রম। প্রতিবছরের মতো এবারও রয়েছে নির্ধারিত থিম সং, দিবসকেন্দ্রিক পোস্টার, সচেতনতামূলক কর্মশালা এবং চিকিৎসকদের নিয়ে সেমিনার।

তিনি আরও জানান, দেশে ফুসফুসের রোগের মধ্যে বিপজ্জনক হচ্ছে সিওপিডি, অ্যাজমা, যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া, আইলএলডি ও লাং ক্যানসার। আর ফুসফুসের রোগের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—বায়ুদূষণ, ধূমপান, অতিরিক্ত ঘনবসতি, দারিদ্র্য ও অসচেতনতা। এসব কারণেই দেশে এখন চল্লিশোর্ধ্ব বয়সী মানুষের ২১ শতাংশই ভুগছে সিওপিডিতে, যাদের ৬২ শতাংশ ধূমপায়ী।
বিপজ্জনক এই রোগ থেকে বাঁচাতে সচেতনতার বিকল্প নেই। ফুসফুস ভালো রাখার বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন ডা. আবদুস শাকুর খান, ‘শরীরের সুস্থতায় ঘুমের বিকল্প নেই। সময়মতো ঘুমাতে যাওয়া এবং তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করতে হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করুন। ভোরবেলায় বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ বেশি থাকে। এই সময়ের বাতাস আপনার ফুসফুসের জন্য উপকারী। নিয়মিত সকালে হাঁটলে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফুসফুসের জোর বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়াম করার সময় জোরে শ্বাস নিতে হবে আর ধীরে ছাড়তে হবে। এতে দেহের পেশিশক্তি বৃদ্ধি পায়। ধূমপান ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি করে। ধূমপান পরিত্যাগ করতে হবে।’

খাদ্যাভ্যাস নিয়ে ডা. আবদুস শাকুর খান বলেন, ‘ফুসফুস সুস্থ রাখতে শাকসবজি, ফল ও মাছ, বিশেষ করে টকজাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। লেবু, কমলা, মাল্টা, বাতাবি লেবু, আমড়া, বরইজাতীয় টকফল ফুসফুসের জন্য উপকারী। ফুসফুসে প্রতিনিয়ত যে ক্ষয় হয়, সে জন্য ভিটামিন সি, ডি এবং জিঙ্কযুক্ত খাবার খাওয়া খুব জরুরি।’