আরিফ মনসুর ::
দরজা খুললেন লতা মঙ্গেশকর স্বয়ং। মুখে সেই চিরপরিচিত মিষ্টি হাসি। রিনিঝিনি কিন্নর কন্ঠে শুধালেন, “ভালো আছো? কেন এসেছো?” “আমরা বাংলাদেশের জন্য ফান্ড কালেক্ট করছি। শরনার্থী এবং আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র, চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনা হবে এই ফান্ড থেকে। আপনারও সাহায্য চাই দিদি।”
মৃন্ময়ীকে বসিয়ে রেখে ভেতরে চলে গেলেন লতা মঙ্গেশকর। বেরিয়ে আসলেন চেক বই হাতে। গুটিগুটি হাতে চেক লিখে এগিয়ে ধরলেন। অংকের ঘরে চোখ পড়তে কিছুটা চমকেই উঠলেন মৃন্ময়ী বোস। এক লক্ষ রুপি। ১৯৭১ সালে এক লক্ষ রুপি মানে কম টাকা ছিল না।
কিন্তু আরও বিস্ময় অপেক্ষা করছে মৃন্ময়ী বোসের জন্য। নিজের গাওয়া কিছু বিখ্যাত গানের রয়ালিটি লতা মঙ্গেশকর সেদিন লিখে দিয়েছিলেন ফান্ডের নামে। যতদিন মুক্তিযুদ্ধ চলবে ততদিন এই সব গান থেকে প্রাপ্ত অর্থ জমা হবে ফান্ডে। বাংলাদেশের ফান্ডে।
এখানেও শেষ নয়। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র স্থাপনেও অর্থ সাহায্য করেছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে অজন্তা শিল্পীগোষ্ঠীর সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্লেনে চেপে বিভিন্ন স্থানে গান পরিবেশন করে বাঙালি রিফিউজিদের জন্য তহবিলও সংগ্রহ করেছিলেন এই কিংবদন্তী। পাশাপাশি গড়ে তুলেছিলেন বাংলাদেশের জন্য বিশ্বব্যাপী গনসচেতনতা। বঙ্গবন্ধুর সাথে ১৯৭৩ সালে সাক্ষাৎ করেছিলেন তবে, তার সহযোগিতার কথা একটিবারও উচ্চারণ করেননি। সাক্ষারতর একটি ছবি বীর মুক্তিযোদ্ধা মনসুর আলী সংগ্রহশালা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সেখানে দেখাযায় গভীর মনোযোগ সহকারে বঙ্গবন্ধুকে দেখছেন লতা মঙ্গেস্কর।
২০১৯ সালে করা এক টুইট বার্তায় সেসব দিনের কথা স্মরন করেছিলেন তিনি।
একাত্তরের বন্ধু-স্বজন,
ভালোবাসা, শ্রদ্ধাঞ্জলি ও কৃতজ্ঞতা রইলো।
# সংগৃহীত।