সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের একাধিক সূত্র ওই দুজনের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। পদত্যাগ করা দুজনের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আর ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জাফর আলমকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
২০১৭ সালে এসআইবিএলের মালিকানা পরিবর্তনের পর আগের সব পরিচালককে বাদ দেওয়া হয়। যে ব্যবসায়ী গ্রুপটি এই ব্যাংকের মালিকানা নিয়েছে, তারাই ব্যাংকটিতে সব
পরিচালক নিয়োগ দেয়। এই প্রক্রিয়ায় প্রথমে এসআইবিএলের চেয়ারম্যান করা হয় চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আনোয়ারুল আজিমকে। পরে মাহবুব-উল-আলম চেয়ারম্যান হন।
ব্যাংকটির ভাইস চেয়ারম্যান মালিকানা নেওয়া গ্রুপটির মালিকের জামাতা বেলাল আহমেদ। তিনি নির্বাহী কমিটিরও চেয়ারম্যান। আর অবসরে যাওয়া এক সেনা কর্মকর্তার স্ত্রীও গ্রুপটির একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষের মনোনীত পরিচালক। এ ছাড়া আরও দুজন পরিচালক হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া ও মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তনের পাঁচ বছরের মাথায় এসে এসআইবিএলের ঋণে বড় অনিয়ম খুঁজে পায় বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতে, এসআইবিএল নতুন যেসব ঋণ দিয়েছে, তার বেশ কটির ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম মানা হয়নি। প্রকল্প ছাড়াই শুধু নথিপত্রের বিপরীতে অনেক গ্রাহককে টাকা দেওয়া হয়েছে। এসব টাকা এখন ফেরত আসছে না। এ জন্য ব্যাংকটির সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার ঋণ নতুন করে খেলাপি হওয়ার যোগ্য। এসআইবিএলের হিসাবে, ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের হার ৫ শতাংশ। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে হিসাব করা হলে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের হার দাঁড়াবে ২৩ শতাংশের বেশি।
এরপর আরও নানা অনিয়ম ধরা পড়ে ব্যাংকটিতে। এ জন্য গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে এসআইবিএলসহ ৫ ব্যাংকের ১০ কোটি টাকার বেশি ঋণ বিতরণ ও আদায়ের তথ্য প্রতিদিন জমা দিতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অন্য ব্যাংক চারটি হলো ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক। এই ব্যাংকগুলো চট্টগ্রাম ভিত্তিক বসে আলম গ্রুপের মালিকানাধীন।
ব্যাংকটির একটি সূত্র জানিয়েছে, পদত্যাগ করা দুজন আর অনিয়মের দায় নিতে চাইছেন না। এ জন্য মালিকানা নেওয়া গ্রুপটি তাদের পছন্দের তালিকা থেকে তাঁদের বাদ দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তাঁরা পদত্যাগ পত্র জমা দেন। ব্যাংকটির পরবর্তী সভায় এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানা গেছে।