নিজস্ব প্রতিবেদক ::
নোয়াখালীর ভাসানচর পরিদর্শনে চার দেশের রাষ্ট্রদূতসহ ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল ছবি : বণিক বার্তা
ভাসানচরের সার্বিক ব্যবস্থাপনা দেখে চার রাষ্ট্রদূতসহ উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা খুশি বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। ভাসানচরের সার্বিক কার্যক্রম দেখে জাতিসংঘের প্রতিনিধিও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বলে জানান তিনি। আজ শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ভাসানচরের সার্বিক ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।
চীন, জাপান, ফ্রান্স, ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত, জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধিসহ ১৯ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দল শুক্রবার নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার ভাসানচরে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের সাময়িক আশ্রয়স্থল পরিদর্শন করেন। এসময় ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বাসস্থানসহ নানাবিধ সুযোগ সুবিধা পর্যবেক্ষণ করেন প্রতিনিধিরা। তারা ভাসানচরের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন শেল্টার হাউজ, ২০ শয্যার হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।
পরির্দশনকালে প্রতিনিধি দলটি ভাসানচরে স্থাপিত কে-ক্রাফট গার্মেন্টসে কর্মরত এফডিএমএমদের বুনন ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন। এছাড়া গার্মেন্টসের উৎপাদন, বিপণন ও মজুরি প্রদান প্রক্রিয়া সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন। তারা হাসপাতালে সরকারি এবং বিভিন্ন এনজিও সংস্থার স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম, চিকিৎসা সরঞ্জাম, ল্যাব ইউনিট, ফিজিওথেরাপি রুম, মেডিসিন ইউনিট ঘুরে দেখেন। এছাড়া হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার, নার্স এবং কর্মচারীদের সঙ্গে চিকিৎসা কার্যক্রম ও সেবার মান নিয়ে আলোচনা করেন। সফরকালে প্রতিনিধি দল লার্নিং সেন্টারে শিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হন। এ সময় প্রত্যাবাসন নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। পরে বিকালে তারা ঢাকার উদ্দেশে ভাসানচর ত্যাগ করেন।
এদিন সকালে ভাসানচর পৌঁছেন চার দেশের রাষ্ট্রদূত ও উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলটি। এর মধ্যে ছিলেন- জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনারী, চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুয় ও ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত হেরু হারতান্তো সুবোল। প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের প্রতিনিধি জোহানেস ভ্যান ডার ক্লাউ, ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের অফিসার-ইনচার্জ সিমোন পার্চমেন্ট।
একই সময়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলটিও হাতিয়ার ভাসানচরে পৌঁছে। প্রতিনিধি দলে ছিলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. সালাহউদ্দিন, মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকি, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের একান্ত সচিব মো. কায়ছারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৯ মোহাম্মদ নাজমুল হক ও পরিচালক-১৪ ডা. মোহাম্মদ মহিবুল হাসান। উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম নেভাল এরিয়া কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী, ভাসানচর (আশ্রয়ণ -৩) প্রকল্প পরিচালক এবং ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার ।
প্রসঙ্গত, ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পে ২০২০ সালে ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে ৩২ হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচরে অবস্থান করছেন।