নিজস্ব প্রতিবেদক ::
পদত্যাগ না করলে সরকারের ফয়সালা রাজপথেই করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এখনো সময় আছে সরে যান। এটাই শেষ সময়, মেনে নেন। আজ বুধবার বিকালে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৭তম কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
তিনি বলেন, স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের সামনে কোনো বিকল্প নাই। এরা সহজে যায় না, এদের ধাক্কা মারতে হয়। আপনাদের অনেকে হীরক রাজার দেশে ছবিটা দেখেছেন না। ছবিতে কী বলছে- দড়ি ধরে মারো টান, রাজা হবে খান খান। সুতরাং দড়ি ধরে টান মারার সময় এসেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখনো সময় আছে, আমরা যে ১০ দফা দিয়েছি সেই ১০ দফা মেনে নিন। পদত্যাগ করুন, সংসদ বিলুপ্ত করুন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। এটাই শেষ সময়, এটা মেনে নেন। তা নাহলে বার বার একই কথা বলছি, আবারো বলছি, পালাবার পথ খুঁজে পাবেন না। তিনি বলেন, অতীতে তো পালিয়েছেন। কেউ পাকিস্তানে পালিয়েছেন, কেউ ভারতে পালিয়েছেন, ১৯৭১ সালে। এবার কিন্তু সেই পথও খুঁজে পাবেন না।
রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বক্তব্য দিয়ে ফেরার পথে যুব দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্নাকে গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি অবিলম্বে মোনায়েম মুন্নাকে মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। রুহুল কবির রিজভীসহ আটক নেতাদের মুক্তি দাবি করছি। এভাবে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা, আটক করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় জনগণ এর প্রতিরোধে গড়ে তুলবে, এর জবাব আপনাদেরকে দেয়া হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, পঞ্চগড়ের হামলার ঘটনায় আমাদের জড়ানোর জন্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বক্তব্য দিয়েছেন যে, বিএনপিও জড়িত আছে। আমাদের প্রায় দেড়শ মানুষকে সেখানে গ্রেফতার করেছে। এখন পঞ্চগড় থেকে মানুষ বাইরে চলে যাচ্ছে। এর উদ্দেশ্যটা কী? উদ্দেশ্য একটাই আবার সেই ষড়যন্ত্র করে বিএনপিকে আবার সাম্প্রদায়িক ঘটনার জন্য দায়ী করে উদোর-পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাতে চায়। কিন্তু এখন আর জনগণ তাদের সেই কথা শুনবে না, তাদের সেই মিথ্যা মন্তব্য শুনবে না।
সম্প্রতি ভবনে বিস্ফোরণের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কীভাবে দেশ চালায়? পর পর তিন দিন বিস্ফোরণ হল। সায়েন্স ল্যাবরেটরির কাছে হল, চট্টগ্রামে হল, ঢাকায় গতকালের বিস্ফারণে ১৯ জন প্রাণ দিয়েছেন। কারো কোনো দায় নেই। সরকার চালাচ্ছো তোমরা? তোমাদের সব প্রতিষ্ঠান আছে- যাদের দায়িত্ব হচ্ছে এগুলো দেখা যে, কোথায় ঠিক মতো আছে কিনা, সেগুলোর দিকে নজর নেই। নজর একটাই চুরি করা, দুর্নীতি করা।
সভায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশে বিরাজনীতিকরণের নামে বিএনপিকে ধবংস করে দেয়ার উদ্দেশে ছিলেএক-এগারো। সেই উদ্দেশ্য নিয়ে হঠাত করেই ১/১১ বাংলাদেশে এসেছিল। সেই হঠাৎ আসা অসাংবিধানিক একটি সরকারকে আন্দোলনের ফসল বলেছিলেন আজকের প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজমদ খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লা্হ আমান, আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, অঙ্গসংগঠনে মহিলা দলের হেলেন জরিন খান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, যুব দলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আবদুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের এস এম জিলানি, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, মতস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ ও ছাত্র দলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল।