নিজস্ব প্রতিবেদক ::
প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রাজধানীর রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। রবিবার (২ এপ্রিল) দুপুরে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট ফিদা এম. কামাল, অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজওয়ানা হাসান ও প্রশান্ত কুমার কর্মকার। dt-ad এর আগে, ৩০ মার্চ ভোরে প্রথম আলোর সম্পাদক এবং প্রকাশক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়। মতিউর রহমান ছাড়াও মামলায় প্রথম আলোর সাভারের নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামস, অজ্ঞাতনামা সহকারী ক্যামেরাম্যানসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহার করে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্দুল মালেক মশিউর এ মামলা করেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫ এর (২), ৩১, ৩৫ আনা অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্তরা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা তথ্য প্রচার করে। এদিকে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার প্রথম আলোর সাভারের নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে আনার একদিন পর আবার কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়। আগাম জামিন নিতে হাইকোর্টে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান/ সংগৃহীত উল্লেখ্য, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের দিন সকালে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট জনদুর্ভোগ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রথম আলো। সবুজ নামের এক শিশুসহ কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করেন প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামস। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর সেটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টে ছবি ও ক্যাপশনে মিল না থাকায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়। এর জেরে ২৯ মার্চ ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সাভারে কর্মরত প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আমবাগান এলাকার বাসা থেকে তাকে তুলে নেওয়া হলেও স্থানীয় পুলিশ জানায়, তারা এ বিষয়ে কিছু জানেন না। একই দিন সৈয়দ মো. গোলাম কিবরিয়া (৩৬) নামে এক যুবলীগ নেতা বাদী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, সাত বছরের শিশু সবুজ আহমেদ প্রথম শ্রেণিতে পড়াশুনা করে এবং স্কুল শেষে মাঝে মাঝে ফুল বিক্রি করে। শিশুটি জানিয়েছে, প্রথম আলোর সাংবাদিক শিশুর হাতে ১০ টাকা দিয়ে এই ছবি তুলেছে। এতে প্রমাণিত হয় স্বাধীনতা দিবসে দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং বাংলাদেশের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার হীন উদ্দেশ্যে একটি অশুভ চক্র দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এই মিথ্যা সংবাদ তৈরি এবং পরিবেশন করে অনলাইন ও সামাজিকমাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে দেশের অভ্যন্তরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। মহান স্বাধীনতা দিবসে এমন মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ এবং বিশ্বব্যাপী প্রচার করায় বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে বাদী ক্ষুব্ধ হয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।