নিজস্ব প্রতিবেদক ::
বাংলাদেশে শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে এই আইন অনুসরণ করা শুরু হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর আমল থেকে। তিনি ১৯৭২ সালের ১ মের ভাষণে বলেছিলেন, সম্পদের মালিক জনগণ। তাই কোনো শ্রেণিবিশেষের ভোগ-লালসার জন্যে এবং লোভ চরিতার্থ করার নিমিত্তে- সম্পদকে অপচয় করতে দেওয়া হবে না। তার লক্ষ্য ছিল সামাজিক বৈষম্য দূর করা।
১৯৭২ সালের মহান মে দিবসে জাতির উদ্দেশে বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি ছিল শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীর প্রতি তার অঙ্গীকারের অনন্য দৃষ্টান্ত। স্বাধীন বাংলার মুক্ত মাটিতে সর্বপ্রথম ঐতিহাসিক মে দিবস পালিত হওয়ার দিনটিতে বাংলার মেহনতি মানুষ শৃঙ্খলমুক্ত পরিবেশে স্মরণ করেছিল অধিকার অর্জন করতে গিয়ে মহান মে দিবসে শহিদ হওয়া ব্যক্তিদের।
বঙ্গবন্ধুর কাছে মহান মে দিবস ছিল শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এক জ্বলন্ত প্রতীক। সারা বিশ্বের শোষিত-বঞ্চিত, নিপীড়িত মানুষের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
যেহেতু তিনি শোষিতের গণতন্ত্রের পক্ষে ছিলেন এবং তার আজীবনের লড়াই ছিল সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার, সে জন্য মে দিবস হয়ে উঠেছিল অনুপ্রেরণার অনন্য উদাহরণ। এ জন্য তিনি ভাষণে বলেছেন-
‘বাংলার মেহনতি মানুষ, বিশেষ করে শ্রমিক-কৃষক ছাত্র যুবক যারা সাম্রাজ্যবাদী শোষণ, প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের জুলুম এবং ঔপনিবেশিক জালেমদের বিরুদ্ধে লড়াই করে স্বাধীনতার ইতিহাস লিখে গেলেন, তাদের ত্যাগ ও তিতিক্ষার কথা বাংলাদেশের মানুষ কোনো দিন ভুলবে না। তারা আর কোনো দিন আমাদের কাছে কোনো দাবিদাওয়া নিয়ে আসবেন না। কিন্তু এই লাখ লাখ শহিদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে, এ দেশের ইতিহাসে। যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশের মানুষ দেশ গড়ার সংগ্রামে। তাদের কাছ থেকে পাবে প্রেরণা। তাই আজকের এই মহান দিনে আমার দেশের শ্রমজীবী মানুষদের আমি শোষণহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্যে বলিষ্ঠ ভূমিকায় নেমে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’
দেশের শ্রমজীবী মানুষদের শোষণহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বানে তিনি মে দিবসের পিছনে থাকা ইতিহাসকে বাঙালির সংগ্রামের সঙ্গে একীভূত করেছেন।
বঙ্গবন্ধু পুঁজিবাদী বিশ্বের শোষণকে মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে অধিকার আদায়ে সেই শোষণের বিরুদ্ধে ছিল তার আপসহীন সংগ্রাম। তিনি জানতেন অতীতে আমরা একটি মর্মান্তিক পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার নিগড়ে বাধা পড়ে গিয়েছিলাম। গুটিকয়েক সুবিধাবাদী ব্যক্তি ও গোষ্ঠী জাতীয় সম্পদ ও শ্রমজীবী মানুষে উৎপাদন নিজেদের কুক্ষিগত করে রেখেছিল। মহান মে দিবসের ইতিহাসেও সেই একই কাহিনি লিপিবদ্ধ রয়েছে।
বিভিন্ন গ্রন্থ ও অনলাইনে উপস্থাপিত তথ্যের সারাংশটি এ রকম- ১৮৮৬ সালে শিকাগো শহরে প্রায় ৪ লাখ শ্রমিক বিভিন্ন কলকারখানায় কাজ করত। ‘হে মার্কেটে’র শ্রমিকরা কাজের সময় ১৬ ঘণ্টার পরিবর্তে ৮ ঘণ্টা আর উপযুক্ত মজুরি আদায়ের দাবি নিয়ে আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়েছিল। ১ মে থেকেই তারা তাদের সক্রিয় আন্দোলনকে বাস্তবে রূপদান করা শুরু করে। শ্রমিকদের একঘেয়ে জীবন ও কলকারখানার দুর্বিষহ পরিবেশে প্রতিদিন ১৬ ঘণ্টা কাজ করা ছিল অত্যাচারের শামিল। সপ্তাহজুড়ে কাজ করে শ্রমজীবীদের স্বাস্থ্য ভেঙে যায়। অতি পরিশ্রমে শিশু ও নারী শ্রমিকরা দুর্বল ও রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে।
স্বল্প বেতনের বিনিময়ে তখনকার মালিকশ্রেণি তাদের ব্যক্তিগত জীবন ও অবসরের সময়টুকুও কেড়ে নিয়েছিল। দিনের পর দিন পরিশ্রম করে ভারবাহী পশুতে পরিণত হয়েছিল তারা। এ জন্য দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের অধিকার স্বীকৃতি দিতে হবে- এই স্লোগান নিয়ে লক্ষাধিক ম
বঙ্গবন্ধুর ১ মের ভাষণ ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা
বাংলাদেশে শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে এই আইন অনুসরণ করা শুরু হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর আমল থেকে। তিনি ১৯৭২ সালের ১ মের ভাষণে বলেছিলেন, সম্পদের মালিক জনগণ। তাই কোনো শ্রেণিবিশেষের ভোগ-লালসার জন্যে এবং লোভ চরিতার্থ করার নিমিত্তে- সম্পদকে অপচয় করতে দেওয়া হবে না। তার লক্ষ্য ছিল সামাজিক বৈষম্য দূর করা।
১৯৭২ সালের মহান মে দিবসে জাতির উদ্দেশে বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি ছিল শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীর প্রতি তার অঙ্গীকারের অনন্য দৃষ্টান্ত। স্বাধীন বাংলার মুক্ত মাটিতে সর্বপ্রথম ঐতিহাসিক মে দিবস পালিত হওয়ার দিনটিতে বাংলার মেহনতি মানুষ শৃঙ্খলমুক্ত পরিবেশে স্মরণ করেছিল অধিকার অর্জন করতে গিয়ে মহান মে দিবসে শহিদ হওয়া ব্যক্তিদের।
বঙ্গবন্ধুর কাছে মহান মে দিবস ছিল শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এক জ্বলন্ত প্রতীক। সারা বিশ্বের শোষিত-বঞ্চিত, নিপীড়িত মানুষের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
যেহেতু তিনি শোষিতের গণতন্ত্রের পক্ষে ছিলেন এবং তার আজীবনের লড়াই ছিল সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার, সে জন্য মে দিবস হয়ে উঠেছিল অনুপ্রেরণার অনন্য উদাহরণ। এ জন্য তিনি ভাষণে বলেছেন-
‘বাংলার মেহনতি মানুষ, বিশেষ করে শ্রমিক-কৃষক ছাত্র যুবক যারা সাম্রাজ্যবাদী শোষণ, প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের জুলুম এবং ঔপনিবেশিক জালেমদের বিরুদ্ধে লড়াই করে স্বাধীনতার ইতিহাস লিখে গেলেন, তাদের ত্যাগ ও তিতিক্ষার কথা বাংলাদেশের মানুষ কোনো দিন ভুলবে না। তারা আর কোনো দিন আমাদের কাছে কোনো দাবিদাওয়া নিয়ে আসবেন না। কিন্তু এই লাখ লাখ শহিদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে, এ দেশের ইতিহাসে। যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশের মানুষ দেশ গড়ার সংগ্রামে। তাদের কাছ থেকে পাবে প্রেরণা। তাই আজকের এই মহান দিনে আমার দেশের শ্রমজীবী মানুষদের আমি শোষণহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্যে বলিষ্ঠ ভূমিকায় নেমে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’
দেশের শ্রমজীবী মানুষদের শোষণহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বানে তিনি মে দিবসের পিছনে থাকা ইতিহাসকে বাঙালির সংগ্রামের সঙ্গে একীভূত করেছেন।
বঙ্গবন্ধু পুঁজিবাদী বিশ্বের শোষণকে মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে অধিকার আদায়ে সেই শোষণের বিরুদ্ধে ছিল তার আপসহীন সংগ্রাম। তিনি জানতেন অতীতে আমরা একটি মর্মান্তিক পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার নিগড়ে বাধা পড়ে গিয়েছিলাম। গুটিকয়েক সুবিধাবাদী ব্যক্তি ও গোষ্ঠী জাতীয় সম্পদ ও শ্রমজীবী মানুষে উৎপাদন নিজেদের কুক্ষিগত করে রেখেছিল। মহান মে দিবসের ইতিহাসেও সেই একই কাহিনি লিপিবদ্ধ রয়েছে।
বিভিন্ন গ্রন্থ ও অনলাইনে উপস্থাপিত তথ্যের সারাংশটি এ রকম- ১৮৮৬ সালে শিকাগো শহরে প্রায় ৪ লাখ শ্রমিক বিভিন্ন কলকারখানায় কাজ করত। ‘হে মার্কেটে’র শ্রমিকরা কাজের সময় ১৬ ঘণ্টার পরিবর্তে ৮ ঘণ্টা আর উপযুক্ত মজুরি আদায়ের দাবি নিয়ে আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়েছিল। ১ মে থেকেই তারা তাদের সক্রিয় আন্দোলনকে বাস্তবে রূপদান করা শুরু করে। শ্রমিকদের একঘেয়ে জীবন ও কলকারখানার দুর্বিষহ পরিবেশে প্রতিদিন ১৬ ঘণ্টা কাজ করা ছিল অত্যাচারের শামিল। সপ্তাহজুড়ে কাজ করে শ্রমজীবীদের স্বাস্থ্য ভেঙে যায়। অতি পরিশ্রমে শিশু ও নারী শ্রমিকরা দুর্বল ও রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে।
স্বল্প বেতনের বিনিময়ে তখনকার মালিকশ্রেণি তাদের ব্যক্তিগত জীবন ও অবসরের সময়টুকুও কেড়ে নিয়েছিল। দিনের পর দিন পরিশ্রম করে ভারবাহী পশুতে পরিণত হয়েছিল তারা। এ জন্য দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের অধিকার স্বীকৃতি দিতে হবে- এই স্লোগান নিয়ে লক্ষাধিক মেহনতি মানুষের সংহতি প্রকাশের জন্য আজ ১মে দুনিয়ার মজদুর এক হও।
# সংগৃহীত ।