আওয়ামী লীগ কখনো গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকার অপচেষ্টা করেনি : ওবায়দুল কা‌দের

আওয়ামী লীগ গায়ের জোর দেখিয়ে কখনো রাষ্ট্রক্ষমতা আঁকড়ে ধরার অপচেষ্টা করেনি বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তিনি অভিযোগ করেছেন, “বিএনপিই বার-বার গায়ের জোর দেখিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার অপচেষ্টা করেছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে সাংবিধানিক চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিলেন। সেনাতান্ত্রিক শাসনের মতবাদ নিয়ে সামরিক ছাউনিতে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল বিএনপি।”

মঙ্গলবার (৯ মে) আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন সেতুমন্ত্রী।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গায়ের জোরে নির্বাচন করা যাবে না। আওয়ামী লীগ সর্বদা জনগণের রায়ের ওপর আস্থাশীল এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ব্যত্যয় ঘটিয়ে গায়ের জোর দেখিয়ে কখনও রাষ্ট্রক্ষমতা আঁকড়ে ধরার অপচেষ্টা করেনি।”

তিনি আরও বলেন, “রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার দুরভিসন্ধি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচন করেছিল বিএনপি। আবার রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের অপ-তৎপরতায় লিপ্ত হয়ে ২০০৭ সালে গায়ের জোরে নির্বাচন করতে গিয়ে গণআন্দোলনের মুখে নিজেদের রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন তা বাতিল করতে বাধ্য হয়। এভাবে গায়ের জোর দেখিয়ে যথেচ্ছাভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বার-বার ক্ষমতা দখলে বিএনপির ব্যর্থ অপকৌশল এ দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করেছে।”

কারও বাকস্বাধীনতা খর্ব করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়নি বলে দাবি করেছেন ওবায়দুল কাদের।

সেতুমন্ত্রী বলেন, “সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করেছে। কারও বাকস্বাধীনতা খর্ব করার লক্ষ্যে নয়। বরং বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে গণমাধ্যম শিল্পের সম্ভাবনার এক স্বর্ণদুয়ার উন্মোচিত করেছেন। সাংবাদিকসহ সকলের বাকস্বাধীনতার অবারিত সুযোগ করে দিয়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, “একটি গোষ্ঠী সকল ধরনের জবাবদিহি ও দায়িত্বশীলতা এড়িয়ে স্বাধীনতার নামে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে দেশবিরোধী অপপ্রচারের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডসহ ডিজিটাল মাধ্যমে সংঘটিত সকল অপরাধ দমনের লক্ষ্যে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করেছে। পৃথিবীর দেশে দেশে অনুরূপ আইন রয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে কথা বলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের তথ্যসন্ত্রাসী ও অপরাধীদের পক্ষাবলম্বন করেছেন।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “মিথ্যা মামলা দেওয়ার বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলামের অভিযোগ কল্পনাপ্রসূত। কোথাও কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সে বিষয়ে তদন্ত করে। কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর রুটিন কাজের অংশ। আর এই তদন্তের ওপর ভিত্তি করে আদালত বিচারিক প্রক্রিয়া গ্রহণ করে। বিএনপি তাদের সন্ত্রাসী নেতাকর্মীদের রক্ষা করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আদালত ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে কথা বলে থাকে।”

ওবায়দুল কাদের বলেন, “সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক সকল ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। করোনাভাইরাস অতিমারি ও বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পারার কারণে বিশ্ব নেতারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করছে। বিশ্বসভায় আজ শেখ হাসিনার নাম বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে উচ্চারিত হচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্ব পেয়ে বাঙালি জাতি গর্বিত। আমরা বিশ্বাস করি, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামী দিনে উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সক্ষম হবো, ইনশাল্লাহ।”