আরিফ নিশির, ঐশ্বির্য্য হোসেন জয় ও ঐতিহ্য হোসেন বাংলা ::
ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় শুরু হওয়া বৃষ্টিবিঘ্নিত দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং প্রদর্শনীতে ৪৫ ওভারে ৬ উইকেটে ৩১৯ রানের সৌধ গড়ে আয়ারল্যান্ড। হ্যারি টেক্টর ১৪০ ও জর্জ ডকরেল ৭৪ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন। অবশ্য আইরিশদের উৎসব মাটি করে তিন বল বাকি থাকতে তিন উইকেটের স্মরণীয় জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্ত ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক।
ওয়ানডে ক্রিকেটে এটা বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ সফলতম রান চেজ। এর আগে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৪ উইকেটে ৩২২ ও ২০১৯ বিশ্বকাপ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩ উইকেটে ৩২২ রান তুলে জয়ের কৃতিত্ব দেখায় বাংলাদেশ। এই জয়টি এখন বাংলাদেশের তৃতীয় সেরা।
৪০ রানের মধ্যে তামিম ইকবাল ও লিটন দাসকে হারায় বাংলাদেশ। এরপরও দাপটে জয়। এই লড়াইয়ে শান্ত সুযোগ্য সঙ্গ পান সাকিব আল হাসান, তৌহিদ হৃদয় ও মুশফিকুর রহিমের। চতুর্থ উইকেটে তৌহিদকে নিয়ে ১০২ বলে ১৩১ রান যোগ করেন। তৌহিদ ৫৮ বলে ৬৮ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলে জর্জ ডকরেলের শিকার হন। শান্ত এর আগে সাকিবকে নিয়ে বোর্ডে যোগ করেন ৪৭ বলে ৬১ রান।
তৌহিদ আউট হওয়ার পর মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে ১৭ বলে ২৫ রান যোগ করে বাংলাদেশকে আরেকটু এগিয়ে দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন শান্ত। কার্টিস ক্যামফারের বলে ডিপ স্কয়ার লেগে টেক্টরকে ক্যাচে দেন তিনি। তার আগে ৯৩ বলে ১২টি চার ও তিনটি ছক্কায় ১১৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন তিনি।
এরপর বাকি পথটুকুতে নেতৃত্ব দেন অভিজ্ঞ মুশফিক। মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে ১৭ বলে ২৯ , তাইজুল ইসলামকে নিয়ে ২২ বলে ২৩ ও শরিফুল ইসলামকে নিয়ে ৮ বলে ১১ রান তুলে দলের স্মরণীয় এক জয় নিশ্চিত করেন তিনি। মুশফিক ২৮ বলে ৩৬ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জয়ের বন্দরে নোঙর করান। শরিফুল অপরাজিত থাকেন চার রানে।
এর আগে ১৬ রানে দুই উইকেট হারিয়ে বসে আইরিশরা। যদিও এই ধাক্কা ভালোভাবেই সামলে নেয় ‘স্বাগতিক’রা। হ্যারি টেক্টর ও অ্যান্ডি বলবির্নি ১০৪ বলে ৯৮ রানের জুটিতে দলকে সংহত অবস্থান গড়ে দেন। অধিনায়ক বলবির্নি ৫৭ বলে ৪২ রানের ইনিংস খেলে শরিফুল ইসলামের শিকার হন। টেক্টর এরপর আরো আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন। লরকান টাকারকে নিয়ে ২৪ ও কার্টিস ক্যামফারকে নিয়ে ২৯ রানের জুটি গড়েন।
ষষ্ঠ উইকেটে জর্জ ডকরেলকে নিয়ে মাত্র ৬৮ বলে ১১৫ রান যোগ করেন টেক্টর। এ পথে তিনি তুলে নেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ১১৩ বলে ৭টি চার ও ১০টি ছক্কায় ১৪০ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলে বোল্ড হন এবাদত হোসেনের বলে। এরপর শেষ ১৮ বলে মার্কা অ্যাডায়ার ও ডকরেল বোর্ডে যোগ করেন আরো ৩৭ রান। ৪৭ বলে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৭৪ রান করে অপরাজিত থাকেন ডকরেল। ইনিংসে মোট ১৬টি ছক্কায় হাঁকায় আইরিশ ব্যাটাররা। আর চারের মার ছিল ২০টি।
এই জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। আগামীকাল রোববার চেমসফোর্ডে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ। প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়।