নিজস্ব প্রতিবেদক ::
আওয়ামী লীগ ক্ষমতা নেওয়ার পরে গত ১৩ বছরে কৃষিতে সরকার ৯৭ হাজার ৮৭৩ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা ভর্তুকি দিয়েছে বলে জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক। এর মধ্যে সারে ভর্তুকির ছিল ৯৫ হাজার ১৬১ কোটি ৫ লাখ এবং বিদ্যুতে এক হাজার ৯৬২ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
রোববার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান কৃষিমন্ত্রী। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপন করা হয়।
সংসদে দেয়া কৃষি মন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯-১০ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে এ ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী। তিনি জানান, ২০২১-২২ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ১৬৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়। এর মধ্যে সারে ১৪ হাজার ৯৪১ কোটি ৬০ লাখ এবং বিদ্যুতে ছিল ২২৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভর্তুকি ২০১২-১৩ অর্থ বছরে দেওয়া হয়েছিল বলে জানান কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক। সর্বনিম্ন ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সরকার কৃষিতে ভর্তুকি দেয় বলে জানান কৃষিমন্ত্রী। ওই বছর তিন হাজার ৪৭০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ভর্তুকি দেয় সরকার।
সরকার দলীয় সংসদ এ কে এম রহমতুল্লাহের আরেক প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছরে কৃষিতে ভর্তুকির জন্য ১৬ হাজার কোটি বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বিশ্ববাজারে পরিস্থিতির কারণে এ ব্যয় আরো বৃদ্ধি পেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে একটি টেকসই সার বিতরণ ব্যবস্থাপনা নেটওয়ার্ক বিরাজমান থাকায় নিরবচ্ছিন্নভাবে সারসহ কৃষি উপকরণ ভর্তুকি মূল্যে সরবরাহ করা যাচ্ছে। কৃষক সঠিক সময়ে সুলভ মূল্যে সার পাওয়ায় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দেশে খাদ্য শস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙার প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের বর্তমান স্থিতির পরিমাণ এক হাজার চারশ ৩৫ কোটি ৯০ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকা। উল্লেখ্য, ২০০৯-১০ অর্থবছর হতে ২০২২-২৩ অর্থ বছরসহ ১৪টি অর্থবছরে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডে ৩ হাজার ৯ শত ১৯ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিলে বরাদ্দকৃত অর্থ এবং তহবিল হতে প্রাপ্ত সুদ দ্বারা এপ্রিল মাস পর্যন্ত তিন হাজার ছয়শ ৬৯ কোটি ছয় লক্ষ ৩২ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে সরকারি ৮৫৬টি এবং বেসরকারি ৬১টি- সর্বমোট ৯১৭ টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রকল্প হল, নদীর তীর সংরক্ষণ, বেড়ি বাঁধ নির্মাণ/পুন:নির্মাণ, সাইক্লোন শেল্টার ইত্যাদি। তিনি বলেন, চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ৪৮৬টি এবং বেসরকারি ৫৭টিসহ ৫৪৩টি প্রকল্প শেষ হয়েছে। সরকারি ৩৭০টি প্রকল্প চলমান রয়েছে।