নিজস্ব প্রতিবেদক :: অর্পিত সম্পত্তি আইনের তিনটি ধারা চ্যালেঞ্জ করে ২০১২ সালে খুলনার শ্যামল কুমার সিংহ ও মশিউর রহমান বেগ দুটি রিট করেন। হাইকোর্ট শুনানি নিয়ে রুল জারি করে, তবে এ রিটের চূড়ান্ত শুনানিতে আইনি ব্যাখ্যার প্রয়োজন বিধায় তিন বিচারপতির মাধ্যমে বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে দেন প্রধান বিচারপতি। এরপর বৃহত্তর বেঞ্চ শুনানি শেষে রিট খারিজ করে বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করে। অর্পিত সম্পত্তির তালিকা তৈরি, ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার এবং জেলা প্রশাসকদের ক্ষমতা নিয়ে অর্পিত প্রত্যার্পণ আইনের তিন ধারা চ্যালেঞ্জ করে রিট খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি নাইমা হায়দারসহ তিন বিচারপতির বৃহত্তর হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ রায় দেয়। বেঞ্চের অপর দুই বিচারক হলেন বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি এ এম কুদ্দুস জামান। রায়ের ফলে আইনের ৯ ধারা অনুসারে অর্পিত সম্পত্তির তালিকা তৈরি, ১৩ ধারায় মামলা নিষ্পত্তিতে ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার এবং ১৪ ধারায় জেলা প্রশাসকের ক্ষমতা বহাল থাকল। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার ওমর ফারুক। ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত। আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ আইন, ২০০১ এর তিনটি ধারা ৯, ১৩ ও ১৪ চ্যালেঞ্জ করে দুটি রিট করা হয়েছিল। সেই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ রুলটি ডিসচার্জ (খারিজ) করে দিয়েছেন। এর ফলে যে রিটের মাধ্যমে তারা তিনটি ধারাকে সংবিধান পরিপন্থি দাবি করেছিল, সেটি কিন্তু এখন সংবিধান পরিপন্থি না; বরং আইনটি যথাযথভাবে করা হয়েছে। কারণ জেলা প্রশাসকের যদি এই প্রত্যার্পণ সম্পত্তি লিজ দেয়ার ক্ষমতা না থাকে তাহলে সম্পত্তি বেহাত হয়ে যাবে। কাজেই এটা সরকারের স্বার্থে জনগণের স্বার্থেই করা হয়েছে। ‘এই কারণে আদালত দুটি রিট খারিজ করে দিয়েছেন। একই সঙ্গে স্থিতাবস্থার আদেশ বাতিল করে দিয়েছেন। এর ফলে অর্পিত সম্পত্তি নিয়ে যদি কারও আপত্তি থাকে তাহলে তাকে ট্রাইব্যুনালে যেতে হবে। জেলা প্রশাসকের লিজ দেয়া এবং বাতিল করার ক্ষমতা বহাল থাকল।’ অর্পিত সম্পত্তি নিয়ে প্রথম আইন হয় ২০০১ সালে, যা কার্যকর হয় ২০১২ সালে। সরকারের এই আইনের উদ্দেশ্য ছিল প্রকৃত মালিকদের জমি ফেরত দেয়া, কিন্তু এর আগেই অর্পিত সম্পত্তি নিয়ে লাখ লাখ মামলা হয়। আইনের তিনটি ধারা চ্যালেঞ্জ করে ২০১২ সালে খুলনার শ্যামল কুমার সিংহ ও মশিউর রহমান বেগ দুটি রিট করেন। হাইকোর্ট শুনানি নিয়ে রুল জারি করে, তবে এ রিটের চূড়ান্ত শুনানিতে আইনি ব্যাখ্যার প্রয়োজন বিধায় তিন বিচারপতির মাধ্যমে বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে দেন প্রধান বিচারপতি। এরপর বৃহত্তর বেঞ্চ শুনানি শেষে রিট খারিজ করে বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করে।