আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘জনগণ তাদের ভোট দেবে। যাকে ইচ্ছা তাকে দেবে। জনগণের ভোট যারা পাবে তারা সরকার গঠন করবে। এটি গণতান্ত্রিক ধারা এবং তা অব্যাহত থাকবে।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি ভালো করেই জানে যে তাদের খারাপ কর্মকাণ্ডের জন্য তারা জনগণের কোনো ভোট পাবে না এবং সে কারণে তারা এখন নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে পেছানোর বাহানা খুঁজছে।’ তিনি বলেন, ‘আসলে তারা চোরের ও ভোট কারচুপিকারীদের দল। ভোট ডাকাতি করা ছাড়া তাদের পক্ষে ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব না।’
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, অতীতে তারা দেশের সম্পদ বিক্রি করার পূর্বশর্ত মেনে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল। জনগণ তাদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না এবং সে কারণেই তারা জনগণের ভোট পায় না। সরকার পতনের জন্য বিএনপির বারবার হুমকি দেয়া প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকার এতটা দুর্বল নয়। আমরা এমন দুর্বল পর্যায়ে নেই যে তারা আমাদের পতন ঘটাবে, আমাদের সঙ্গে জনগণ আছে, আমাদের শক্তি আমাদের জনগণ।’
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের বিষয়ে বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা সম্পূর্ণ স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি, কিন্তু বিএনপি এখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবি করছে।’ বিএনপি কি পাগল নাকি শিশু হয়ে গেল—প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একবার খালেদা জিয়া দাবি করেছিলেন, পাগল বা শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়। চোরদের, স্বাধীনতাবিরোধীদের ও খুনিদের ক্ষমতায় এনে আমরা বাংলাদেশকে অন্যের কাছে মাথা নত হতে দেব না।’
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ বাংলাদেশে যে গণতান্ত্রিক ধারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা আমাদের আন্দোলনের ফসল। এজন্য আমার দলের নেতাকর্মীরা জীবন দিয়েছেন। আর আমি গ্রেনেড হামলা থেকে অল্পের জন্য বেঁচে গেছি।’
গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতার সুফল তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘নিরবচ্ছিন্ন গণতান্ত্রিক ধারায় দেশ বদলেছে, আজ দেশ উন্নত হয়েছে, আজ বাংলাদেশ বিশ্বে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে আছে।’
‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ যে মর্যাদা পেয়েছে তা নিয়েই এগিয়ে যাবে। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত ও সমৃদ্ধ স্মার্ট সোনার বাংলা গড়ে তুলব।’
বাংলাদেশের যেকোনো সংকটে প্রবাসীদের ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখে।’ তিনি প্রবাসীদের হুন্ডির মাধ্যমে দেশে রেমিট্যন্স না পাঠিয়ে বৈধ মাধ্যমে টাকা পাঠানোর আহ্বান জানান। এছাড়া বিদেশ যেতে আগ্রহীদের দালাল সম্পর্কে সচেতন ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন এবং নিবন্ধনের মাধ্যমে বৈধ উপায়ে বিদেশে যাওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪-১৫ জুন অনুষ্ঠিত হওয়া ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট: সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল’-এ যোগদান শেষে নিজ দেশের উদ্দেশে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা ত্যাগ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টা ৫০ মিনিট) জেনেভা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। এর আগে ১৩ জুন চারদিনের সরকারি সফরে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী।