‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ নির্বাচন সংশয় কেন – দৈনিক মুক্ত বাংলা
ঢাকাশনিবার , ১১ নভেম্বর ২০২৩
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি-ব্যবসা
  3. আইন ও আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আরও
  6. ইসলাম ও ধর্ম
  7. কোভিট-১৯
  8. ক্যারিয়ার
  9. খেলা
  10. জেলার খবর
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. বিনোদন
  13. মি‌ডিয়া
  14. মু‌ক্তিযুদ্ধ
  15. যোগা‌যোগ
 
আজকের সর্বশেষ সবখবর

‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ নির্বাচন সংশয় কেন

সম্পাদক
নভেম্বর ১১, ২০২৩ ১:০৭ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

।। আরিফ হো‌সেন নি‌শির ।।

 কেউ কেউ মন্তব‌্য কর‌ছেন ‘কী হতে যাচ্ছে’ সে সম্পর্কে কোনো প্রকার ধারণা না থাকায় দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে যে ধরনের আশা-উদ্দীপনার প্রয়োজন, তা আমাদের মধ্য থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।
অথচ আমি দেখ‌ছি নির্বাচন এক‌টি উৎসব , বু‌দ্ধি হবার পর থে‌কেই এই উৎস‌বে আমরা শরীক হ‌য়ে‌ছি। কখনও দলীয় কখনও বা নির্দলীয় প্রার্থীর প্রচারনার মে‌তে উঠে‌ছি। আমি জা‌নি না আমা‌দের বু‌দ্ধির ভান্ডার উজার ক‌রে যারা দেশ‌কে এগি‌য়ে নেবার কথা ব‌লছেন। তত্বাবধায়ক সরকার ও অবাধ, সুষ্ঠু নির‌পেক্ষ নির্বাচ‌নের দোহায় দেয়া রাজ‌নৈ‌তিক দলগু‌লো হিংসা আর হানাহা‌নি‌তে ধা‌বিত হ‌চ্ছেন তারাও কি বু‌কে হাত দি‌য়ে বল‌তে পার‌বেন তা‌দের যারা সরকা‌রে থে‌কে নির্বাচ‌নের দা‌য়িত্ব পালন ক‌রে‌ছি‌লেন তারা আজ যে দাবী কর‌ছেন! সেই দাবী বাস্তবায়ণ ক‌রে‌ছি‌লেন ?
ক‌রেন নি। আর ক‌রেন‌নি ব‌লেই খেশারত দি‌তে হ‌য়ে‌ছিল জনগন‌কে।
তাহ‌লে এটা তো প‌রিস্কার নির‌পেক্ষতার দোহায় দি‌য়ে ধোয়া তুল‌শিপাতা হবার উপায় নেই। তাহ‌লে কেন দেশের জনগন‌কে মসল্লা পেষা পিষ‌ছেন ?  একদল হ‌চ্ছেন সিল আরেকদল পাটা হ‌য়ে মা‌ঝে জনগন‌কে ফে‌লে পিষ‌ছেন ! আর কত দিন ? আর কত দিন এভা‌বে চল‌বে ? কিংবা চালা‌বেন ?  কা‌রো কি দা‌য়িত্ব নেই ?  জনগন এখন অ‌নেক স‌চেতন। চাইলেও আগের ম‌তো পার‌বেন না কোন পক্ষই ! জনগন এখন উন্নয়ন বো‌ঝে, দু‌ভোগ বো‌ঝে, দ‌নি‌ি‌তি বো‌ঝে অ‌নিয় বো‌ঝে।

নির্বাচন আসন্ন। এই সময়টাতে রাজ‌নৈতিক দলগু‌লোর নেতা যারা আপনা‌দের ব্যস্ত থাকার কথা যোগ্য প্রার্থীর খোঁজে এবং আগে যারা নিরাশ করেছে, তাদেরকে শাস্তি দিতে। কিন্তু এর পরিবর্তে আপনারা জনগন‌কে জি‌ম্মি ক‌রে রা‌জনৈ‌তিক সংঘাত সৃ‌ষ্টি কর‌ছেন! মানুষ মার‌ছেন, আগুন দি‌চ্ছেন গা‌ড়ি বা‌ড়ি সম্প‌দের ! আপনারা কার ক্ষ‌তি কর‌ছেন ?  আমরা যারা সাধারণ মানুষ তারা একেক‌টি দিন একেক‌টি রাত পার করছি উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা আর আশঙ্কায়। 

সরকা‌র পক্ষ আপনা‌দের নির্বাচ‌নে অংশ নেবার আমন্ত্রন জানা‌লেও তা প্রত‌্যাখ‌্যান ক‌রে আপনারা যারা ধবংসাত্বক আন্দোল‌নের ডাক দি‌য়ে‌ছেন তা‌দের সায়স্তা কর‌ছে।  

আন্দোলনকা‌রি দল বিএন‌পির নেতারা কেউ কেউ বল‌ছেন,সাদা পোশাকের পুলিশ বা তাদের বেশে অন্য কেউ জোর করে ঘরে ঢুকে ‘গুম’ করে দেয়। অপরাধ হলো, আমার কোনো বন্ধু বা আত্মীয় কোনো এক সময়, কোনো এক জায়গায় বিরোধী দলের কোনো এক মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন।

আবার আমাদের অফিস, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, দোকান, কারখানা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বাধ্য করা হচ্ছে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে, অন্যথায় হামলার ঝুঁকি নিয়ে এগুলো চালু রাখতে হচ্ছে।

সবচেয়ে কঠোর ভাষায় আমরা উভয়পক্ষের রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি দাবি জানাই, বর্তমানে যে রাজনীতি চলছে, তা থেকে বিরত থাকুন এবং এই অসহনীয় পরিবেশের অবসান ঘটান।

একের পর এক মেগা প্রকল্পের উদ্বোধন হচ্ছে—বঙ্গবন্ধু টানেল, বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ, মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা কক্সবাজার রেল সং‌যোগ, মে‌রিন ড্রাইভ সড়ক উড়াল সড়ক। সরকারের এসব অর্জনে আমরা সবাই অত্যন্ত গর্বিত।

কিন্তু এসব অর্জনের মর্ম পুরোপুরি বুঝে ওঠার আগেই দেশের অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমাদেরকে আতঙ্কিত করছে। আর এর জন্য দায়ী সরকার ও আন্দোলনকা‌রি দল উভয়ই। এ ক্ষেত্রে সরকারের দায় বেশি। কারণ, বিরোধী দল রাস্তায় নেমে আন্দোলন ও সহিংসতা শুরুর আগে সরকার বিদ্যমান মতভেদ নিরসনের কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

‘ দেশ এগি‌য়ে যাচ্ছে দুর্বার গ‌তি‌তে’ সে সম্পর্কে কোনো প্রকার ধারণা দলমত নি‌র্বিশে‌ষে সক‌লের ম‌ধ্যে  জা‌গি‌য়ে তুল‌তে ব‌‌্যর্থ হ‌য়ে‌ছে সরকার। আর সে কার‌ণে  দেশকে সংকট থে‌কে উত্তোরণ ক‌রে সামনে এগিয়ে নিতে যে ধরনের আশা-উদ্দীপনার প্রয়োজন, তা আমাদের মধ্য থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।

প্রতিদিনই বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী নেতা, ব্যাংকার ও বুদ্ধিজীবীরা সতর্ক করছেন যে আমাদের অর্থনীতি ভঙ্গুর অবস্থায় আছে। জনগণ উচ্চ মূল্যস্ফীতির অভিঘাতে জর্জরিত, যা অক্টোবরে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশে পৌঁছে গেছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি রেকর্ড ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশে পৌঁছেছে। রপ্তানি আয় কমছে, আর তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কমছে টাকার মান ও ডলারের রিজার্ভ।

অথচ আমাদের দেশ‌প্রেমিক (তথাক‌থিত) নেতারা এতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন কেন ? তারা কেন এত সব অশনি সংকেতকে আমলেই নিচ্ছেন না ? সব দায় কি সরকা‌রের ? যারা বি‌রোধী রাজনী‌তি কর‌ছেন তারা কি শুধু ধবংসাত্বক কর্মকান্ড চা‌লি‌য়ে যা‌বেন ? সুষ্ঠু রাজ‌নৈ‌তিক সংস্কৃ‌তির চর্চা কর‌বেন না ?

আমাদের প্রধানমন্ত্রী বারবার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের অঙ্গীকারের কথা বলে এসেছেন। কিন্তু তার নিজের এবং তার দলের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড কি তাই বলে ? বিরোধী দলকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ বলা, বিরোধী নেতাদের নিয়ে বিষোদগার, হুমকি—এসব কি সৌহার্দ্যপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ তৈরিতে ন্যূনতম সহায়ক হচ্ছে ?

প‌ত্রিকায় প্রকা‌শিত প্রতি‌বেদন অনুযায়ী, পুলিশ যাদেরকে খুঁজছে, তাদের না পেলে পরিবারের সদস্য, ড্রাইভার, সহকারী, এমনকি বয়োজ্যেষ্ঠ আত্মীয়দের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের কাজ কেবলমাত্র তখনই করা সম্ভব, যখন আইনের প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধাটুকুও আর থাকে না।

আর রাজ‌নৈ‌তিক সমা‌বে‌শে পু‌লিশ‌কে পি‌টি‌য়ে হত‌্যা কিংবা এম্বু‌লে‌ন্সে আগুন, হাসপাতা‌লে হামলা ! কখনই গনতা‌ন্ত্রিক রাজি‌নৈ‌তিক দল প‌রিচ‌য়ের রাজ‌নৈ‌তিক দলগু‌লোর আন্দোল‌নের ভাষা হ‌তে পা‌রে না।

আর অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগ পর্যন্ত একজন ব্যক্তি নিরপরাধ—আইনের এই মৌলিক শিক্ষা হয়তো আমরা ভুলে গেছি। তাই তো ‘যাকে পাওয়া যাবে, তাকেই শাস্তি দিতে হবে’, এমন পদ্ধতিতে চলছি। সন্তান, জীবনসঙ্গী, বয়স্ক আত্মীয়, নিকটাত্মীয়, বন্ধু, এমনকি বেতনভুক্ত গৃহকর্মীদেরও শাস্তি দেওয়া যাবে, যাতে পুলিশ যাকে খুঁজছে তিনি ধরা দিতে বাধ্য হন। এটা ন্যায়বিচারের প্রতি সবচেয়ে বড় উপহাস।

বিএনপির তথ্য অনুযায়ী, গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে সারা দেশে তাদের মোট ৮ হাজার ৯৫১ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তথ্য অনুযায়ী, ১ হাজার ৬৩৬ বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার ও তাদের বিরুদ্ধে ১১২টি মামলা করা হয়েছে। সামগ্রিকভাবে গ্রেপ্তারের হিসাব বিবেচনায় নিলে সংখ্যাটি আরও অনেক বড় হবে। কিংবা কম বেশি। তা‌তে তো কা‌রো কিছু যায় আসে না।

বি‌এন‌পি না‌মের রাজ‌নৈ‌তিক দল‌টি কেন ধ্বংসাত্বক রাজনৈ‌তিক খেলায় মেতে‌ছেন ৳ কেন তারা সুস্থ রাজ‌নৈ‌তিক ধারা চর্চা কর‌ছেন না?

এরপর প্রশ্ন আসে, বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কারাগারে কেমন আচরণ করা হচ্ছে। তাদেরকে যেহেতু বেআইনি জনসমাবেশ, পুলিশ‌কে পি‌টি‌য়ে হত‌‌্যা, অস্ত্র ছিনতাই, কর্তব‌্য কাজও দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া, জানমালের ক্ষয়ক্ষতি, বিস্ফোরণ ও ভাঙচুরের মতো সুনির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তাই তাদেরকে সাধারণ কয়েদি হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে, রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে নয়। ফলে, রাজনৈতিক নেতা হিসেবে কারাগারে তারা ডিভিশন পাচ্ছেন না। বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস সম্প্রতি আদালতে দাবি করেছেন, কারাগারে তাকে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদিদের সঙ্গে মাটিতে ঘুমাতে বাধ্য করা হয়েছে।

প‌ত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ৬৮টি কারাগারে প্রায় ৭৭ হাজার কয়েদি আছেন। ২২ সেপ্টেম্বর সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্য থেকে এই সংখ্যাটি জানা যায়। তবে গত ৭ নভেম্বর পর্যন্ত হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, কয়েদির সংখ্যা ৮৮ হাজার, যা কারাগারগুলোর মোট ধারণক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশি।

গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় সমাবেশের পর বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের কারণেই মূলত হঠাৎ করে কয়েদির সংখ্যা এত বেড়েছে। কারাগারের নিয়ম অনুযায়ী, প্রত্যেক কয়েদির অন্তত ৬ ফুট বাই ৬ ফুট জায়গা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ এখন সেই সুবিধাটুকুও দিতে পারছে না।

রাজনীতিবিদদের শাস্তি দিতে কীভাবে আইন ব্যবহার করা হচ্ছে, তার উদাহরণ হিসেবে দেখা যেতে পারে জ্যেষ্ঠ ও সম্মানিত রাজনীতিবিদ এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ঘটনাটি। তার বয়স ৭৫, হৃদরোগসহ নানা অসুস্থতায় ভুগছেন। গত ২৯ অক্টোবর সকালে ‘প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালানো’র মতো অবাস্তব কারণ দেখিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২ নভেম্বর তিনি জামিন আবেদন করতে গেলে জানতে পারেন, বিচারক শুনানির দিন ধার্য করেছেন ২০ নভেম্বর।

আবার একজন প‌ত্রিকার সম্পাদ‌কের বিরু‌দ্ধে সরাস‌রি মাশলা ক‌রে গ্রেফতার ক‌রে জেল হাজ‌তে পাঠানো হ‌চ্ছে। সু‌যোগ দেয়া হ‌চ্ছে না অ‌ভিযাগ প্রমা‌নের ! কিংবা গনমাধ‌্যমের বিরু‌দ্ধে মামলা হবোর কথা প্রেসকাউন্সি‌লে সেখা‌নে না ক‌রে ফৌজদারী অপরাধ দে‌খি‌য়ে মামলা করা হ‌চেছ নিয়‌মিত আদাল‌তে। তাহ‌লে প্রেসকাউন্সিল পীফশন কেন রাখা হ‌য়ে‌ছে ?

এখানে দুটি বিষয় লক্ষ্য করার মতো। প্রথমত, এটা কি বিশ্বাসযোগ্য যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগী‌রের মতো একজন মানুষ প্রধান বিচারপতির বাসভবনে‌কেন  হামলা চালাবেন  ?  তাহ‌লে যারা হামলা চালা‌লো  কারা ? তারা  কি পু‌লিশ সদস‌্য ছিল ? নিশ্চয় আন্দোলনকা‌রিরা ক‌রে থাক‌বেন ? তাহ‌লে এই বিষয়টি কি সম্মানিত বিচারকের মনোযোগ আকর্ষণ করা‌তে পা‌রেন‌নি কেন ফখরু‌লের আইনজী‌বি ? না কি আইনজী‌বিরা রাজ‌নৈ‌তিক আচরণ ক‌রে‌ছেন?

দ্বিতীয়ত, ১৮ দিন পর শুনানির দিন ধার্য করার মাধ্যমে মির্জা ফখরুলকে তার মৌলিক অধিকার নিয়ে কথা বলার সুযোগ দেওয়ার আগেই অন্তত ১৮ দিনের কারাবাস নিশ্চিত করা হলো।

একই ভা‌বে যে গনমাধ‌্যমের সম্পাদক তথ‌্য বিভ্রাট কিংবা খবর প্রকা‌শের কার‌ণে মামলা শিকার হ‌য়ে জে‌লে গে‌লেন বিচা‌রের আগেই কারাবাস ক‌রে নি‌লেন। তা‌দের কি অপরাধ ?

এখা‌নে বেশ প‌রিস্কা যারা বি‌রোধী মত প্রকাশ কর‌বেন কিংবা বিরোধী দলের কোনো সমাবেশে যোগ দেওয়ার কথা ভাববেন, তাদের সবার জন্য এখানে রয়েছে একটি পরিস্কার বার্তা।

এরকম বার্তার ইতিহাস নতুন নয় অতী‌তেও রাজপ‌থে,মোহাম্মদ না‌সিম, তোফা‌য়েল আহমদ, ম‌তিয়া চৌধুরী, এডভো‌কেট সাহারা খাতুনরা পু‌লি‌শের লা‌ঠি পেটা খে‌য়ে‌ছেন। জে‌লে গেছেন।  সেই একই বার্তা অশ‌নি সং‌কেত!

এটা কি কল্পনা করা যায় যে এমন একটি পরিস্থিতিতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব ? সরকারের নিপীড়ন এবং সবচেয়ে বড় বিরোধী দলের ধ্বংসাত্বক আন্দোলন নস‌্যাত করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলমান থাকলে একটি নির্বাচনের আর কি আশা থাকে? একা এক‌টি দল নির্বাচন ঠেকা‌তে পা‌রে কি ?

আর সরকার পক্ষ একাই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পা‌রে কি? শুরু থেকেই এই দুই রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে যতটুকু দূরত্ব ছিল, তার সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে সীমাহীন রাগ, অসম্মান, অবিচার ও দুর্ব্যবহার।

সরকার‌কে অপবাদ দি‌য়ে ধ্বংসাত্বক রাজনী‌তি ক‌রে বিএন‌পি নি‌জের অস্তিত্ব সংক‌টে ফে‌লে‌ছে। জনগন‌কে জি‌ম্মি ক‌রে রাজ‌নৈ‌তিক ফায়দা লোটার স্বপ্ন ভে‌স্তে গে‌ছে। বরং বল‌লো ভুল প‌থে হাট‌ছে বিএন‌পি।

আর বিরোধী দলকে ‘অপশক্তি’ হিসেবে উপস্থাপনের যে প্রয়াস চলছে, তাতে চলমান সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের যৎসামান্য সুযোগটুকুও আর রইলো না।

সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের নামে বিএনপিকে ভেঙে টুকরো টুকরো করার নীতিতে এগোচ্ছে সরকার।

এমন‌কি বি‌রোধী দলের কিছু হতাশ নেতাকর্মীকে প্রলুব্ধ করে নতুন নতুন দল গঠনের মতো ঘৃণ্য নীতিও নিয়েছে সরকার, যাতে তারা পরবর্তীতে সরকারের সঙ্গে সুর মিলিয়ে চলে।

এ নী‌তির খেলা নতুন নয়, জিয়া এরশাদ তারাও ক্ষমতা টি‌কি‌য়ে রাখ‌তে বা ক্ষমতায় যে‌তে একই পদ্ধ‌তির আশ্রয় নি‌য়ে‌ছি‌লেন। যা দে‌শের সুষ্ঠু রাজনী‌তির জন‌্য অন্তরায়।

“সার্বিকভাবে যা চলছে তা হচ্ছে, নির্বাচনী কারসাজি। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের কোনো প্রস্তুতিই নেওয়া হচ্ছে না। এর জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে এবং পুলিশ, বিভিন্ন সংস্থা ও আইনি ব্যবস্থাকে কাজে লাগানো হচ্ছে। এর সার্বিক ফলাফল হলো, জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে নিজেদের নেতা বেছে নেওয়ার সুযোগ পাবে না, বরং নানা কারসাজি ও ছল-চাতুরীর মাধ্যমে আগে থেকে বেছে রাখা নেতাদের চাপিয়ে দেওয়া হবে আমাদের ওপর। অন্য যেকোনো দেশ হলে একে অভিহিত করত প্রহসন হিসেবে। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে এটাই হচ্ছে ‘যেকোনো মূল্যে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা’ অব্যাহত রাখার প্রক্রিয়া।”  এমন মন্তব‌্য ক‌রে‌ছেন স্বনামধ‌ন‌্য সাংবা‌দিক মাহফুজ আনাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দ্য ডেইলি স্টার।

তি‌নি যে ভা‌বে সরকা‌রের বিরু‌দ্ধে সরাস‌রি শক্ত অবস্থা‌নের কথা ব‌লে‌ছেন, তা‌তে ক‌রে ম‌নে হয়, তি‌নি বি‌রোধী দল বা বিএন‌পির কোনই দোষই দেখ‌ছেন, না বা দেখ‌তে পাননা। তাহ‌লে কিভা‌বে হ‌বে। উনার ম‌তো একজন বিচক্ষন গনমাধ‌্যম মহার‌থি এক চোখ হ‌লে সরকার কেমন ক‌রে দু চো‌খে দেখ‌বেন ?

বিএন‌পির ম‌তো দ‌লের উচিৎ ভে‌বে দেখা আজ তারা যে খেলায় মে‌তে‌ছেন! সে খেলা  সরকা‌রি দল আওয়ামী লীগ খে‌লে‌ছে । আর এ খেলা প্রতিহ‌তের যে পথ তা  তাদেরই দে‌খি‌য়ে দেয়া প‌থে হাট‌ছে সরকার। তাহ‌লে ম‌্যারাডনা হ‌য়ে হাত দি‌য়ে গোল দেয়া‌কেঈশ্বর হাত ব‌লে চা‌লি‌য়ে দি‌য়ে ম‌্যারাডোনা‌বিখ‌্যাত। একসময় সরকা‌রি দল ধ্বংসাত্বক রাজনী‌তি ক‌রে তত্বাবধায়ক সরকার বিএন‌পি‌কে বু‌ঝি‌য়ে‌ছিল ঠিকই। কিন্তু কা‌লের প‌রিক্রমায় দে‌শের জনগন‌কে এতটায় সকা‌রের উন্নয়ন তোতমা খে‌য়ে‌ছে যে ধ্বংসাত্বক কাজ ক‌রে তা‌দের সমর্থন আদায় এখন বেশ ক‌ঠিন হ‌য়ে গে‌ছে। এখন আর হাত দি‌য়ে গোল দেবার স‌ু‌যোগ নেই । রি‌ভিউ পদ্ধ‌তি এসে গে‌ছে। বরং জনগ‌নের দাবী‌কে কাজ লাগাতে হ‌লে তা‌দের সমর্থন আদায় কর‌তে হ‌লে আপনা‌কে জনদুর্ভোগ নি‌য়ে আন্দোলন কর‌তে হ‌বে। নিত‌্য প‌ণ্যের মুল‌্য বৃ‌দ্ধির প্রতিবাদ ক‌রে জন সমর্থন বা জনসম্পৃক্ত হ‌তে হ‌বে। এভা‌বে জন আন্দালন‌কে গন অভ‌্যুত্থা‌নে পুরনত কর‌তে হ‌বে। ধ্বংসাত্বক কর্মকান্ড প‌রিহার কর‌তে হ‌বে।

ত‌বেই দেশ ও জা‌তির মঙ্গল করা সম্ভব হ‌বে।

লেখক :  আরিফ হো‌সেন নি‌শির , দৈ‌নিক মুক্তবাংলা সম্পাদক ।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।