ট্রি অব পিস পুরস্কার কেলেঙ্কারিতে জড়ালেন ড. ইউনূস – দৈনিক মুক্ত বাংলা
ঢাকাবুধবার , ২৭ মার্চ ২০২৪
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি-ব্যবসা
  3. আইন ও আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আরও
  6. ইসলাম ও ধর্ম
  7. কোভিট-১৯
  8. ক্যারিয়ার
  9. খেলা
  10. জেলার খবর
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. বিনোদন
  13. মি‌ডিয়া
  14. মু‌ক্তিযুদ্ধ
  15. যোগা‌যোগ
 
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ট্রি অব পিস পুরস্কার কেলেঙ্কারিতে জড়ালেন ড. ইউনূস

বার্তা কক্ষ
মার্চ ২৭, ২০২৪ ৮:৫৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মিতা হো‌সেন ::

শ্রমিক ঠকানোর মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ড. মুহম্মদ ইউনূস আবারও জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ইউনেস্কো তাকে ‌‌‘দ্য ট্রি অব পিস’ পুরস্কার দিয়েছে বলে নিজে ও তার ইউনূস সেন্টার ব্যাপক প্রচারণায় নামে। তবে বাংলাদেশ ইউনেস্কো কমিশনের চেয়ারম্যান শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলছেন, খবরটি একশ ভাগ মিথ্যা।

শ্রমিক ঠকানোর মামলায় সাজা পাওয়ার পর এবার ইউনেস্কোর পুরস্কার কেলেঙ্কারিতে জড়ানোর অভিযোগ উঠেছে ড. ইউনূসে বিরুদ্ধে।
আর বিশ্লেষকরা বলছেন, যখনই কোনো না কোনোভাবে ড. ইউনূস কোনো সমস্যা সৃষ্টি করেন, তখন তার সমর্থকরা আন্তর্জাতিক কোনো প্লাটফর্ম থেকে তাকে সহায়তার চেষ্টা করেন। এবারও ‘দ্য ট্রি অব পিস’ নিয়ে তেমনই চেষ্টা করা হচ্ছে বলে ধারণা তাদের।
ড. ইউনূসের ‌‘দ্য ট্রি অব পিস’ পুরস্কারে ভূষিত হওয়ার খবরটি গত বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়।
তার প্রায় এক সপ্তাহ পর বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে বাংলাদেশ ইউনেস্কো কমিশনের চেয়ারম্যান শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, খবরটি ভুয়া, বিভ্রান্তিকর। যা প্রচার করে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন ড. ইউনূস ও ইউনূস সেন্টার।
বিষয়টিকে বাংলাদেশের জন্য অপমানজনক উল্লেখ করে ইউনূস সেন্টারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান মন্ত্রী। 
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ইউনেস্কোর নাম নিয়ে ড. ইউনূস বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছেন, যেটা অনৈতিক ও অপরাধমূলক। আবার একজন ইসরাইলি ভাস্করের দেয়া উপহার ইউনেস্কোর নামে চালিয়ে দেয়া দেশের জন্যও মানহানিকর।
ইউনূসের এই পুরস্কার প্রতারণার বিষয়ে শুধু দেশে আইনি ব্যবস্থার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে চায় না ঢাকা। ব্যাখ্যা পাঠাবে ইউনেস্কোর সদর দফতরে- যেন তাদের করণীয় সারতে পারে সংস্থাটি।
 
নওফেল আরও বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত সংবেদনশীল ও অপমানজনকও বটে। আমরা ইউনেস্কোকে এটা বলব। এছাড়া শ্রম আইন লঙ্ঘনের জন্য ইউনূস যে দণ্ডিত হয়েছেন, সেটাও ইউনেস্কোকে জানাব। একজন দণ্ডিত ব্যক্তি ইউনেস্কোর নাম নিয়ে যে অপপ্রচার করছেন, এটি থেকে ইউনেস্কোকে সতর্ক করব।’
 
তাহলে ড. ইউনূস আসলে পেয়েছেন কী? যা নিয়ে প্রতারণা করলো ইউনূস সেন্টার? তাও জানালেন শিক্ষামন্ত্রী।
 
‘আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে একটি সম্মেলনে নিজামি গাঞ্জাভি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন নামের একটি সংস্থার আমন্ত্রণে ইউনূসকে একটি সম্মাননা স্মারক দেন ইসরাইলি ভাস্কর হেডভা সার। তিনিও নিশ্চিত করেছেন ইউনূসকে ইউনেস্কো কোনো সম্মাননা দেয়নি। গাঞ্জাভি ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে ইউনূসকে তিনি এটা দিয়েছেন,’ যোগ করেন মন্ত্রী।
 
ইউনূস কি সত্যই জাতির সঙ্গে পদক প্রতারণা করেছেন? গত ১৭ মার্চ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেয়া এক পোস্টে ড. ইউনূস জানান, ইউনেস্কো তাকে ‘দ্য ট্রি অব পিস’ অ্যাওয়ার্ড দিয়েছে। তার দাবির পক্ষে ওই পোস্টে তিনি একটি ভিডিও যুক্ত করেন।
 
তার দাবির সত্যতা কতটুকু? যেতে চাই গত মার্চ ১৪-১৬ আজারবাইজানে আয়োজিত বাকু ফোরামে ড. ইউনূসকে এই অ্যাওয়ার্ড দেয়া সংস্থা নিজামি গাঞ্জাভি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ডে। তাদের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে; পদক প্রাপ্তদের তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশের শ্রম অধিকার লঙ্ঘনের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত ড. ইউনূস। তবে, পরিষ্কারভাবে একে নিজামি গাঞ্জাভি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড বলা হলেও এর কোথাও ‘দ্য ট্রি অব পিস’ শব্দের উল্লেখ নেই।
পুরস্কার বিতর্কে যা জানালো ইউনেস্কোর ঢাকা অফিস
২০১২ সাল থেকে এই পুরস্কার দেয়া হচ্ছে। তবে ইউনূস ও ইউনূস সেন্টারের এই পদক প্রতারণার পক্ষে তথ্য মিলছে জাতিসংঘের ইউনেস্কোর ওয়েবসাইটেও। কোথাও উল্লেখ নেই ইউনূসকে এই অ্যাওয়ার্ড দেয়ার কথা।
 
এ বিষয়ে জানতে ইউনেস্কোর ঢাকা অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে সময় সংবাদ। বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন জানায়, ড. ইউনূস এই পুরস্কার পেয়েছেন বলে ইউনেস্কো সদর দফতর কিছুই জানে না।
 
আরও জানানো হয়, ড. মুহাম্মদ ইউনূস পরিচালিত ইউনূস সেন্টারের পাঠানো এবং প্রচারিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং প্রতারণামূলক। বাংলাদেশ ইউনেস্কোর অন্যতম সক্রিয় সদস্য রাষ্ট্র। ভবিষ্যতে ইউনেস্কোর মতো জাতিসংঘের এমন একটি মর্যাদাপূর্ণ এবং সুখ্যাতিপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের নাম অপব্যবহার থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ইউনূস সেন্টারকে সতর্ক করা হলো।

ড. ইউনূসের পুরস্কার প্রাপ্তির বিষয়ে দেয়া বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের বক্তব্য।

 

এই বিষয়টি যেহেতু প্রতারণামূলক এবং পরিকল্পিত মিথ্যাচার সেহেতু তাদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে না তারও ব্যাখা চাওয়া হবে বলে জানায় বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন।
কেন দেয়া হয় ‘ট্রি অব পিস
বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ব্যক্তি, সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতার স্মারক হিসেবে ‘দ্য ট্রি অব পিস’ দেয়া হয়। মানব সমাজের টেকসই উন্নয়ন এবং প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহারের জন্য উল্লেখযোগ্য পরিবেশগত যোগ্যতার জন্য এই পুরস্কার দেয়া হয়। আন্তঃধর্মীয় সংলাপে অবদানের জন্যও পুরস্কার দেয়া হতে পারে।
‘ট্রি অব পিস’ পেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
নারী ও কন্যাশিশুদের শিক্ষা প্রসারের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৪ সালে ইউনেস্কোর ‘ট্রি অব পিস’ বা ‘শান্তিবৃক্ষ’ পুরস্কার পেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা শেখ হাসিনার হাতে স্মারকটি তুলে দিয়েছিলেন।
 
আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ‘শান্তিবৃক্ষ’ স্মারক তুলে দেয়ার সময় হাসিনাকে ‘সাহসী নারী’ হিসেবেও অভিহিত করেন ইউনেস্কোর মহাপরিচালক। তিনি বলেন, নারী ও কন্যাশিশুদের ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বমঞ্চের ‘জোরালো এক কণ্ঠ’৷
 
পরে ইউনেস্কোর দেয়া পুরস্কার বিশ্বের সব নারী ও শিশুদের উত্‍সর্গ করেন শেখ হাসিনা। বিশেষ করে বাংলাদেশের কন্যাশিশুদের।সমস্যায় জড়ালেই ড. ইউনূস নেন নানা ছলের আশ্রয়
ইউনেস্কোর ‘ট্রি অব পিস’ নিয়ে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে ওঠা প্রতারণার অভিযোগ বিষয়ে কথা বলেছেন  রাজনৈতিক বিশ্লেষক, গবেষক, কলাম লেখক ও সাংবাদিক সুভাষ সিংহ রায়।
 
তার মতে, যখনই ড. ইউনূস বিভিন্নভাবে সমস্যায় পড়েন বা বিতর্কিত ঘটনায় জড়ান তখনই তার ভাবমূর্তি উন্নয়নের কাজ চলে। আর এতে তার আন্তর্জাতিক সমর্থকরাও সহায়তা করেন। গাঞ্জাভি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে পুরস্কার পাওয়ার বিষয়টিও তেমন। তবে এ নিয়ে মিথ্যা প্রচারণার বিষয়টি জাতিকে অপমানিত করেছে।
 
সিনিয়র এ সাংবাদিক আরও বলেন, ড. ইউনূস নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। বিষয়টি আমাদের জন্য গর্বের। তবে পরবর্তী সময়ে তিনি পদ্মা সেতুসহ দেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন, ষড়যন্ত্র করেন। এটা কখনো মেনে নেয়া যায় না।
 
ইউনেস্কোর পুরস্কার নিয়েও ড. ইউনূস আবার
বিতর্কিত ঘটনার জন্ম দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এমন পুরস্কার ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পেয়েছেন। নারী ও শিশু শিক্ষায় উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ইউনেস্কোর মহাপরিচাক তাকে এ পদকে সম্মানিত করেছিলেন। তবে ড. ইউনূস তা পাননি। তবু তিনি ও তার সমর্থকরা এ নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে আমাদের অসম্মানিত করেছেন।
 
তিনি বলেন, ‘কথায় আছে দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যাজ্য। ড. ইউনূসের বেলাতেও তেমন কথা খাটে। তবু তার কথায় ও প্রচারণায় আমাদের শিক্ষিত সমাজের একটি অংশ বিভ্রান্ত হয়। তবে এসব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, মানুষ সচেতন হলে আরও প্রশ্নবিদ্ধ হবেন তিনি।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।