ডি এস মাহফজা হোসেন ::
ছবিটি লিজি ভালসাকেজের। জন্মেছিলেন টেক্সাসের অস্টিনে ১৯৮৯তে। এখন তার বয়স ২৫বছর। হাইস্কুলে পডার সময় তাকে নিয়ে তৈরি হয়েছিল ৮ মিনিটের ইউটিউব ভিডিও। চেহারা দেখতে রীতিমত ভয়ংকর; কুৎসিত; ওজনও কম; একটি চোখ অন্ধ । রঙ্গিন সভ্যতা স্বীকৃতি দিয়েছিল- তিনি `বিশ্বের কুৎসিৎ মেয়ে”আগলি গার্ল’।
সবাই বলতো- আত্মহত্যা করতে; সবার থেকে লুকিয়ে থাকতে; মুখ ঢেকে রাখতে ।। কিন্তু সেইসব কিছু কানে না নিয়ে তখনই নিজের জীবনের চারটি লক্ষ্য স্থির করে ফেলেছিলেন লিজি। প্রথমত, একজন সুবক্তা হওয়া; দ্বিতীয়ত, নিজের লেখা বই প্রকাশ করা; তৃতীয়ত, স্নাতক হওয়া; ও নিজের কেরিয়ার ও পরিবার তৈরি করা। সেই থেকেই গত সাত বছরে ২০০-র বেশি ওয়ার্কশপে বক্তৃতা দিয়েছেন তিনি। কীভাবে অভিনবত্বকে স্বীকৃতি দিতে হয়; বাধা, বিঘ্ন পেরিয়ে কীভাবে জীবনকে গ্রহণ করতে হয়; প্রতিকুল পৃথিবীতে ঘুরে দাঁড়াতে হয়; ভালোবাসতে হয়, এই সাত বছর ধরে সেই বিষয়ের ওপরই বক্তৃতা দিয়ে চলেছেন লিজি।
২০১০এ লিজি লিখে ফেলেন তার আত্মজীবনীমুলক বই ‘”Lizzie Beautiful’;
২০১২ সালে দ্বিতীয় বই ‘Be Beautiful, Be You’; যা ব্যাপক সাড়া পেলে; যে বইটির শুরুতে লিজি বলেন- ‘এপিয়ারেন্স নয়; মানুষকে মূল্যায়ন করতে হবে অর্জিত গুন দিয়ে’।
এই বছরই প্রকাশিত হতে চলেছে তার তৃতীয় বই। তৈরি করেছেন মোটিভেসনাল ‘It Gets Better’ এর মত অনেকগুলো ভিডিও। পড়ালেখার অদম্য ইচ্ছায় বর্তমানে সান মার্কোজের টেক্সাস স্টেট ইউনিভার্সিটিতে কমিউনিকেশন নিয়ে পড়াশোনা করছেন লিজি।
TWITTER এ লিজির এক বন্ধু বলেছে- ‘This young woman is a very good example of what it means to be truly beautiful’
আরেক বন্ধু বলেছে- ‘লিজি কুৎসিত নয়; কুৎসিত হল লিজিকে দেখার আমাদের চোখ’।।
লিজির মাও বলেছে- I love Lizzie, I would be proud to be her mom।
অথচ সুস্থ, স্বাভাবিক মানুষ হয়েও আমরা অল্পেতে হতাশ হয়ে পড়ি; নিজের রুপ-চেহারা আমাদের ভোগায়; Fair & lovely, LUX’র বিজ্ঞাপন দেখে হীনমন্যতায় ভুগি; রঙ্গিন কর্পোরেট বিশ্বে নিজকে অসহায় ভাবি। ভাবি- চেহারায় সব, রুপ-ফিগারই সবকিছুর মাপকাঠি
। আর সেখানে লিজি ভালসাকেজই সবচে বিশাল অনুসরনীয় দৃষ্টান্ত।
সংগৃহীত ।