মহারানী ভবানী প্রজা বান্ধব জ‌মিদার – দৈনিক মুক্ত বাংলা
ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২ মে ২০২৪
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি-ব্যবসা
  3. আইন ও আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আরও
  6. ইসলাম ও ধর্ম
  7. কোভিট-১৯
  8. ক্যারিয়ার
  9. খেলা
  10. জেলার খবর
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. বিনোদন
  13. মি‌ডিয়া
  14. মু‌ক্তিযুদ্ধ
  15. যোগা‌যোগ
 
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মহারানী ভবানী প্রজা বান্ধব জ‌মিদার

বার্তা কক্ষ
মে ২, ২০২৪ ৩:৪৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

অ‌মিতাভ কাঞ্চন ::

মহারাণী ভবাণী (১৭১৬ – ১৮০২) ইংরেজ শাসনামলে বর্তমান বাংলাদেশের নাটোরের একজন জমিদার ছিলেন। তার পিতা আত্মারাম চৌধুরী এবং মাতা তমাদেবী চৌধুরী রাণী ৷ দান, ধ্যান, শিক্ষা, পানীয় জলের ব্যবস্থা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, চিকিৎসা ও ধর্মীয় কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ তার প্রজারা তাকে ‘মহারাণী’ নামে আখ্যায়িত করে।

তার বিয়ে নিয়ে আছে একটা মজার কাহিনী

রাণী ভবানীর বয়স যখন ১৩ বছর, সে সময় প্রায় তিনি কাছারি বাড়ি ফুলের বাগানে সকাল বেলায় ফুল তুলতে যেতেন। রাণী ভবানীর মাথায় সবসময় কাপড় থাকত। একদিন হঠাৎ বাতাসে তার মাথার কাপড় পড়ে গেলে সে সময় রাণী ভবানীর চেহারা রামকান্ত দেখতে পান। তিনিও জমিদারের মেয়ে। তবে মেয়ের বাবা আত্মারাম চৌধুরীর জমিদারি নাটোরের থেকে অনেক ছোট। তাতে কি! তিনি ঠিক করলেন এই মেয়েকেই বিয়ে করবেন।
খবর পাঠানো হলো আত্মারাম চৌধুরীর মহলে। এত বড় জমিদারের কথায় কীভাবে ফিরিয়ে দেন তিনি! যেন সুবর্ণ সুযোগ বাড়ির দরজায় হাজির। কিন্তু মেয়ে অনেক বেশি জেদি। বিয়ে করতে তার শর্ত আছে, মোট তিনটা! এক, বিয়ের পর এক বছর তাকে বাবার বাড়িতে থাকতে দিতে হবে। দুই, এলাকার দরিদ্র মানুষকে দান করতে হবে জমি। আর তিন নম্বর শর্তটা ছিল সবচেয়ে বেশি অদ্ভুত। বাবার জমিদারি থেকে নাটোর পর্যন্ত রাস্তা বানিয়ে সেটা লাল শালু দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। সেটাতে হেঁটেই তিনি শ্বশুরবাড়ি যাবেন। রামকান্ত অবশ্য প্রত্যেকটা শর্তই মেনে নিয়েছিলেন। আর বিয়ের পর সেই মেয়ে হয়ে উঠলেন নাটোরের জমিদার বাড়ির বৌ, রানী ভবানী।
এমন গল্পই প্রচলিত রানী ভবানীর বিয়ে নিয়ে। তবে তার রানী হয়ে ওঠার পথটা অবশ্য অনেকটাই দীর্ঘ। তার এবং রামকান্তের তিন সন্তানের মধ্যে শুধু মেয়ে তারাসুন্দরী বাদে দুই ছেলে ছোটবেলায় মারা যান। এই তারাসুন্দরীকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা। পরে রামকৃষ্ণ নামের একটি ছেলেকে দত্তক নিয়েছিলেন রানী ভবানী। রামকান্তও অকালে চলে যান পৃথিবী ছেড়ে। তখন অবশ্য বাংলার নবাব ছিলেন সিরাজের দাদু আলিবর্দি খাঁ। নাটোরের জমিদার মারা যাওয়াতে নবাব আলিবর্দি নাটোরের জমিদারি পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দেন রানি ভবানীর হাতে। এই রানি ভবানীর জমিদারি বিস্তৃত ছিল এখনকার রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, কুষ্টিয়া, যশোর, রংপুর, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম ছাড়িয়ে মালদা পর্যন্ত।
১৭৪৮ থেকে ১৮০২ সাল পর্যন্ত ৫৪ বছর ধরে এত বিশাল জমিদারি সামলিয়ে তিনি পরিচিত হলেন ‘অর্ধবঙ্গেশ্বরী’ নামে। জমিদারির তরফ দেখে নবাবকে রাজস্ব দিতেন বছরে প্রায় সত্তর লাখ টাকা। অর্থাৎ তখনকার দিনে এটা খুব বড় একটা অংক। হলওয়েল লিখে গেছেন, নবাব এবং ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি–দু’পক্ষই রানিকে বেশ সমীহ করে চলতেন। তবে, পলাশির যুদ্ধে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার পক্ষ নিয়ে লড়ার জন্য সৈন্যবাহিনী পাঠিয়েছিলেন রানী ভবানী।
এত কিছুর পরও প্রজাদের জন্য যা কিছু করে গেছেন তা স্মরণীয়। সুপেয় পানির জন্য অসংখ্য জলাশয়, পথিকদের জন্য পান্থশালার সঙ্গে সঙ্গে ‘ভবানী জাঙ্গাল’ নামের সেতু আর রাস্তাও তৈরি করিয়েছিলেন। হাওড়া থেকে কাশী পর্যন্ত রাস্তার ব্যবস্থা করেছিলেন। শোনা যায়, বিয়ের আগে বাবার জমিদারি অঞ্চলে তিনি ৩৬০টা পুকুর খুঁড়িয়েছিলেন আর প্রত্যেকদিন আলাদা আলাদা পুকুরে স্নান করতেন।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।