পু‌লিশী তান্ডব ভাঙ্গ‌লেন শহীদ জননী জাহানারা ইমাম – দৈনিক মুক্ত বাংলা
ঢাকাশুক্রবার , ৩ মে ২০২৪
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি-ব্যবসা
  3. আইন ও আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আরও
  6. ইসলাম ও ধর্ম
  7. কোভিট-১৯
  8. ক্যারিয়ার
  9. খেলা
  10. জেলার খবর
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. বিনোদন
  13. মি‌ডিয়া
  14. মু‌ক্তিযুদ্ধ
  15. যোগা‌যোগ
 
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পু‌লিশী তান্ডব ভাঙ্গ‌লেন শহীদ জননী জাহানারা ইমাম

বার্তা কক্ষ
মে ৩, ২০২৪ ১২:২৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আরিফ হো‌সেন নি‌শির ::

শহীদ জননী জাহানারা ইমাম ১৯২৯ সালের ৩ মে তিনি অবিভক্ত বাংলার পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার সুন্দরপুরে জন্মগ্রহণ করেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তিনি পুত্র রুমী ও স্বামী শরিফ ইমামকে হারান। মুক্তিযোদ্ধার গর্বিত মা, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সংগঠক এই মহীয়সী নারীর নেতৃত্বেই গত শতকের নব্বইয়ের দশকে গড়ে ওঠে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলন।পাকিস্তানের শাসন-শোষণ থেকে মুক্ত সদ্য স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশ যখন নতুন, একটি নতুন পতাকা নিয়ে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চায়, ঠিক সেই সময় বাঙালির জাগরণের মহাজাদুকর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানি দোসরদের মদদে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার ঘটনা সেই নিকষ কালো অধ্যায়গুলোর একটি। তারপর থেকে বাংলাদেশ উল্টোপথে, উল্টো রথে। হত্যা করা হয় বাঙালির মুক্তির স্বপ্ন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। স্বাধীনতা বিরোধীরা চলে আসে ক্ষমতার কেন্দ্রে।
জাতির স্বাধীনতা সংগ্রাম মুক্তিযুদ্ধ তথা স্বাধীন বাংলাদেশকে করা হয় ক্ষত-বিক্ষত। জিয়াউর রহমান ক্ষমতাসীন হবার পর ১৯৮১ সালে জামায়াতে ইসলামীর নেতা গোলাম আজম পাকিস্তানী পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। এরপর তার নানা ধরনের তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। শেষ পর্যন্ত খোলস ছাড়িয়ে ১৯৯১ সালে গোলাম আজমকে জামায়াতে ইসলামীর আমীর নির্বাচন করা হয়।
তার আগেই জামায়াতে ইসলামীর সমর্থন নিয়ে বিএনপি সরকার গঠন করে।বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র বিশ বছরের মাথায় ১৯৯১ সালের ২৯ ডিসেম্বর গোলাম আজমকে জামায়াতে ইসলামী দলের আমীর ঘোষণা করলে দেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষেরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে, বিক্ষোভের অংশ হিসেবে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা শফী ইমাম রুমীর মা জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি ১০১ সদস্যের একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠিত হয়। মুজিবকন্যা শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সমর্থনে এই আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। শহীদ জননীকে আহবায়ক করে গণআদালতের অন্য সদস্যরা ছিলেন-অ্যাডভোকেট গাজীউল হক, ড. আহমদ শরীফ, স্থপতি মাজহারুল ইসলাম, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, সুফিয়া কামাল, কবীর চৌধুরী, কলিম শরাফী, শওকত ওসমান, সেক্টর কমান্ডার কাজী নুরুজ্জামান, আবু ওসমান চৌধুরী ও ব্যারিস্টার শওকত আলী খান প্রমুখ। কমিটি ১৯৯২ সালে ২৬ মার্চ ‘গণআদালত’ গঠন করে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একাত্তরের ‘নরঘাতক’ গোলাম আজমসহ কাদের মোল্লার প্রতীকী বিচার শুরু করে।
গণআদালতে গোলাম আজমের বিরুদ্ধে ১০টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উত্থাপিত হয়। ১২ জন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত গণআদালতের চেয়ারম্যান জাহানারা ইমাম গোলাম আজমের ১০টি অপরাধই মৃত্যুদণ্ড যোগ্য বলে ঘোষণা করেন। ওই সময় জাহানারা ইমাম গণআদালতের রায় কার্যকর করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।গণআদালতের এই বিচার পরিচালনা করায় তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি সরকার জাহানারা ইমাম ও সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করে। রাষ্ট্রের আইন আদালত যখন কর্তব্য পালনে ব্যর্থ, ঠিক তখন এগিয়ে আসে জনগণ। শহীদ জননীও এগিয়ে এসেছিলেন রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনে কিন্তু বিএনপি সরকার তাকে দাঁড় করিয়েছিল আদালতের কাঠগড়ায়। ক্যান্সার নিয়েও আন্দোলন চালিয়ে পরিণত হন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আন্দোলনের প্রতীকে।একজন সুসাহিত্যিক হিসেবেও পরিচিত ছিলেন জাহানারা ইমাম। তার লেখা ‘একাত্তরের দিনগুলি‘ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম দলিল। তার লিখিত অন্য গ্রন্থগুলো হচ্ছে-অন্য জীবন, বীরশ্রেষ্ঠ, জীবন মৃত্যু, চিরায়ত সাহিত্য, বুকের ভেতরে আগুন, নাটকের অবসান, দুই মেরু, নিঃসঙ্গ পাইন, নয় এ মধুর খেলা, ক্যান্সারের সঙ্গে বসবাস ও প্রবাসের দিনলিপি।তি‌নি ছি‌লেন সাহসী নারী ১৯৯৩ সা‌লের ১৩ জুলাই গন আদাল‌তের রায় কার্যক‌রের দাবী‌তে কু‌ষ্টিয়ায় ঘাতক দালাল নির্মুল ক‌মি‌টি আয়োজন করে‌ছিল সমা‌বে‌শের। কু‌ষ্টিয়া প‌াবলিক লাইব্রেরী চত্ব‌রের সে সমা‌বেশ উপল‌ক্ষ্যে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক, আহাদ চৌধুরী, কাজী আরেফ আহ‌মেদসহ কেন্দ্রী নেতা‌রা হা‌জির হয়ে‌ছি‌লেন কু‌ষিটয়া সা‌র্কিট হাউজে। কিন্তু জামাত শি‌বির সে‌দিন সরকা‌রের পৃষ্ট‌পোষকতায় সমা‌বেশ পন্ড করার উদ্যোগ নেয়। একই স্থা‌নে সমা‌বে‌শের ডাক দেয় তারা। পু‌লিশ সং‌হিংসতা এড়া‌তে ১৪৪ ধারা ক‌রে। কিন্তু কু‌ষ্টিয়ার আন্দোলনকামী জনতা‌কে থামা‌তে প‌া‌রে‌নি পু‌লিশ। সে‌দিন আকা‌শের প্রখর খরতা‌পের ম‌ধ্যে রাস্তায় নে‌মে আসে। শহীদ জননীর নি‌র্দেশে ছাত্র জনতা জাতীয় পতাকা ও বিভিন্ন ব‌্যানার ফেসটুন নি‌য়ে ‌গোলাম আয‌মের ফা‌সির গন আদাল‌তের রায় কার্ডক‌রের দাবীতে স্লোগান দি‌তে থা‌কে। সা‌র্কিট হাউজ থে‌কে কু‌ষ্টিয়া জেলা স্কু‌লের সাম‌নে দি‌য়ে মি‌ছিল‌টি মজমপুর রেলগেট এলাকায় পৌছা‌লে শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা। এ সময় পু‌লিশ জামাত শি‌বি‌রের পক্ষ নি‌য়ে এলা পাথারী গু‌লি ছুড়‌তে থা‌কে। নির্মুল ক‌মি‌টি জমা‌য়েত ছত্রভঙ্গ হ‌য়ে যায় শুরু হয় মুশুল ধা‌রে বৃ‌ষ্টি। দু একজন যারা বাছাকা‌ছি ছি‌লো তারা আবারও জ‌ড়ো হ‌য়ে মি‌ছিল কর‌তে গে‌লে পু‌লিশ তা‌দের ধাওয়া ক‌রে। এসময় জাতীয় পতাকা হা‌তে এক  শিক্ষার্থী দৌড়ে পালা‌তে গে‌লে পু‌লিশ তার ওপর চড়াও হয়। তা‌কে ধর‌তে গি‌য়ে জাতীয় পতাকা ঠে‌নে ছি‌ড়ে রাস্তায় ফে‌লে দেয় পিএসআই শওকত। সে জাতীয় পতাকা পা‌য়ে মা‌ড়ি‌য়ে তা‌কে ধর‌তে উধ‌্যত হয়। জাতীয় পতাকা পদদ‌লিত করার সেই ছ‌বি সাংবা‌দিক হিসে‌বে আমি তু‌লে ছিলাম। সা‌থে সা‌থে ছ‌বির রিল‌টি ক‌্যা‌মেরা থে‌কে বের ক‌রে। আমি সা‌র্কিট যাবার চেষ্টা ক‌রি। পু‌লিশ আমা‌কে পি‌টি‌য়ে আমার ক‌্যা‌মেরা কেড়ে নেই। ভে‌ঙ্গে ফে‌লে ক‌্যা‌মেরা আমি পা‌লি‌য়ে সা‌র্কিট হাউজে আশ্রয় নেয়। সেখা‌নে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম, কাজী আরেফ আহ‌মেদ ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক ভাইকে ঘটনা‌টি ব‌লি। তখন তারা সমা‌বেশ স্থ‌লে যাবার প্লান বাদ দি‌য়ে সা‌ি‌র্কিট হাইজের সাম‌নে বের হ‌য়ে আসেন। শহীদ জননী আমা‌কে তার আচ‌লে ঢে‌কে রা‌খেন। রাজ্জাক ভাই ও আরেফ ভাইকে  সা‌র্কেল এএস‌পি আজিজুর রহমান ব‌লেন,স‌্যার আপ‌নি বের হ‌বেন না। রাজ্জাক ব‌লেন, আমি এম‌পি আব্দু রাজ্জাক বল‌ছি,কোথায় পু‌লিশ আমার ছে‌লে‌দের ওপর হামলা ক‌রে আমার জাতীয় প‌তাকা পদদ‌লিত ক‌রে এতবড় সাহস কোথায় পে‌য়ে‌ছে সে।  তা‌কে নি‌য়ে আসা আমার সাম‌নে আমি তার পাছার চামড়া তুল‌লো ———-এ এস‌পি আজিজুর রহমান স‌্যারআপ‌নিখা‌লি দি‌তে পা‌রেন না। আপ‌নি শান্ত। রাজ্জাক অশ্রাব‌্য ভাষায় গালাগা‌লি ক‌রে ব‌লেন আমি দেখ‌বো তোমা‌দের‌কে ব‌লে সা‌র্কিট হাউজের সমা‌নের গে‌টে দা‌ড়ি‌য়ে বক্তব‌্য দি‌তে থা‌কেন।

এদি‌কে শহীদ জননী আমা‌কে ব‌লেন, তু‌মি যাও ছ‌বি ঢাকায় পাঠাও আমি সা‌র্কিট হাউজের ভিআইপি ফোন থে‌কে ‌নিউজটা দি‌য়ে রাজ্জাক ভাই এর ইশারায় শহর রেল ষ্টেশ‌নে না গি‌য়ে কু‌ষ্টিয়া রেল ষ্টেশন চ‌লে আসি। এসে রেল টি‌টি জোয়াদ্দার‌কে একটা প‌্যা‌কে‌টে ছ‌বি ও নে‌গে‌টিভ টাই দি‌য়ে দেয় । ও‌কে ব‌লি রাজবা‌ড়ির ষ্টেশন মাষ্টা‌রের কা‌ছে পৌ‌ছে দি‌তে। সেখান থে‌কে বন্ধু সুরুজ‌কেব‌লি ঢাকার জিগাতলায় আজ‌কে কাগ‌জের অ‌ফি‌সে ‌পৌ‌ছে দি‌তে। সে পৌ‌ছে দেয়। তারপর রা‌তে আমা‌কে পু‌লিশ বাসা থে‌কে তু‌লে আনে। কারণ বিবিসি ও ভ‌য়েস অব আমে‌রিকা অসাথারণ কাভা‌রেজ ক‌রে। আমার সাক্ষাতকার প্রচার রাজ্জাক ভাই এর সাক্ষাতকার জাহানারা ইমা‌মের সাক্ষাতকার সে এক এলাহী কান্ড।

জাতীয় সংস‌দে আব্দুর রাজ্জাক প‌য়েন্ট অব অর্ডা‌রে বিষয়‌টির বিচার বিভাগীয় তদ‌ন্তের দাবী ক‌রেন ক‌বরন এবং দোষী‌ পু‌লিশ অ‌ফিসা‌রের শা‌ন্তির দাবী জানান।

রা‌তে আমা‌কে পু‌লিশ বেশ আদর ভা‌লো দেন।

যাক শহীদ জননী ও আমার বীর মু‌ক্তিযোদ্ধা বাবার প‌রিচয়ও আমা‌কে রেহায় দেয়‌নি।

সে‌দিন দে‌খে‌ছিলাম শহীদ জননীর ভা‌লোবাসা কা‌কে ব‌লে। তি‌নি ও কাজী আরেফ ভাই আমা‌কে কত ভা‌বে। পু‌লি‌শের নির্যাতন থে‌কে রক্ষা ক‌রে‌ছি‌লেন। আমরা যারা তখন ছাত্র আন্দোল‌নের না‌তে সম্পৃক্ত ছিলাম জননী তা‌দের‌কে সম‌বেত ক‌রে ব‌লে‌ছি‌লেন শপথ নাও অন‌্যা‌য়ের সা‌তে কেউ আপোস করবা না।

জননীর ‌সে দি‌নের শপথ আজো স্মর‌ণে রে‌খেই পথ চ‌লি। যত‌দিন বাচ‌বো তত‌দিন সেই আদর্শে পথ চল‌তে চাই।

 

 

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।