মহানবীর রওজা জেয়ারতের ফ‌জিলত – দৈনিক মুক্ত বাংলা
ঢাকারবিবার , ১৭ মার্চ ২০২৪
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি-ব্যবসা
  3. আইন ও আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আরও
  6. ইসলাম ও ধর্ম
  7. কোভিট-১৯
  8. ক্যারিয়ার
  9. খেলা
  10. জেলার খবর
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. বিনোদন
  13. মি‌ডিয়া
  14. মু‌ক্তিযুদ্ধ
  15. যোগা‌যোগ
 
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মহানবীর রওজা জেয়ারতের ফ‌জিলত

বার্তা কক্ষ
মার্চ ১৭, ২০২৪ ১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

নিম‌কি হো‌সেন ::

মস‌জি‌দে নবমীর সবুজ গম্বুজের নিচেই রাসূলুল্লাহ (সা.) এর রওজা।

মসজিদে নববীর সবাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ স্থান হলো রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা মোবারক। উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশা (রা.)-এর হুজরার (কামরা) মধ্যে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পবিত্র রওজা মোবারক অবস্থিত।

হজ ও ওমরা পালনকারীদের মদিনা যাওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য হলো- নবী করিম (সা.)-এর রওজা মোবারক জিয়ারত করা, রওজায় সালাম পেশ করা।

রাসূল (সা.) এর রওজার পাশে ইসলামের প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) ও ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর কবর। পাশে আরেকটি কবরের জায়গা খালি। এখানে হজরত ঈসা (আ.)-এর কবর হবে।

হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে আমার রওজা জিয়ারত করলো, তার জন্য আমার সুপারিশ ওয়াজিব হয়ে গেলো।’ -সহিহ মুসলিম

রাসূলুল্লাহ (সা.) আরো বলেন, ‘যে হজ করলো কিন্তু আমার রওজা জিয়ারত করলো না; সে আমার প্রতি জুলুম করলো।’ -সুনানে তিরমিজি

হাজিদের মদিনায় প্রবেশ করার মুহূর্তগুলো স্বপ্নের মতো। মসজিদে নববীর কাছাকাছি এলে হাজিদের প্রাণচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। তাদের অস্থির চোখগুলো খুঁজতে থাকে সাদা মিনার আর একটি সবুজ গম্বুজ। যে গম্বুজের নিচে শায়িত আছেন বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

সবুজ গম্বুজ দেখার প্রাণান্তকর চেষ্টারত হাজিদের দেখলে মনে হয়, এই বুঝি তারা তাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ কিছু অর্জন করতে যাচ্ছে। মুখে দরুদ আর চোখের কোন বেয়ে বেরিয়ে আসা অশ্রু দৃষ্টিকে ঝাপসা করে দিলেও, হৃদয়ের চোখে অমলিন হয়ে গেঁথে থাকা সবুজ গম্বুজ ঠিকই দেখে নেন এক ঝলক।

রাজা-বাদশা ও উজির-নাজির থেকে শুরু করে, হাজারো অলি-আউলিয়া, গাউস-কুতুব এই গম্বুজ দেখে চোখ ভিজিয়েছেন। এ গম্বুজকে ঘিরে রচিত হয়েছে অসংখ্য কবিতা। সেই গম্বুজ কাছে থেকে দেখার অনুভূতি লিখে বুঝানোর মতো না।

হাজির জন্য মদিনা শরিফ জিয়ারত করা সুন্নত। অনেকে ওয়াজিবও বলে থাকেন। এ কারণে হজপালনের আগে কিংবা পরে হাজিরা মদিনা শরিফ আসেন। মদিনায় অবস্থানকালে হাজিদের প্রথম এবং প্রধান কর্তব্য হচ্ছে, মসজিদে নববিতে হাজিরা দেয়া এবং সেখানে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা।

মসজিদে নববিতে এক রাকাত নামাজের সওয়াব পঞ্চাশ হাজার রাকাত নামাজের সমান। এছাড়া মসজিদে নববীতে বিরতিহীনভাবে ৪০ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায়ের আলাদা ফজিলত রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার মসজিদে চল্লিশ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেছে আর কোনো নামাজ কাজা করেনি, সে নিফাক (মোনাফিকি) আর দোজখের আজাব থেকে নাজাত পাবে।’

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা শরিফ জিয়ারতের ফজিলত প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ওফাতের পর তার রওজা মোবারক জিয়ারতে করলো, সে যেন হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কে জীবদ্দশায় দর্শন করলো।’

মসজিদে নববিতে প্রবেশের অনেকগুলো দরজা রয়েছে। তন্মধ্যে পশ্চিম পাশে রাসূলের রওজা জিয়ারতের জন্য যে দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে হয়, ওই দরজাকে ‘বাবুস সালাম’ (এক নম্বর গেট) বলা হয়। বাবুস সালাম দিয়ে প্রবেশ করে রাসূলের রওজায় সালাম শেষে ‘বাবুল বাকি’ দিয়ে বের হতে হয়।

মদিনায় জিয়ারতে হাজিদের জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। মদিনায় এসে দুনিয়ায় জীবিত থাকতে জান্নাতে ভ্রমণের সুযোগ মেলে। কারণ নবী করিম (সা.)-এর রওজা শরিফ এবং এর থেকে পশ্চিম দিকে রাসূলে করিম (সা.)-এর মিম্বর পর্যন্ত স্বল্প পরিসরের স্থানটুকুকে রিয়াজুল জান্নাত বা বেহেশতের বাগিচা বলা হয়। এটি দুনিয়াতে একমাত্র জান্নাতের অংশ। এই স্থানে স্বতন্ত্র রঙয়ের কার্পেট বিছানো।

এই স্থানটুকু সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমার রওজা ও মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থানে বেহেশতের একটি বাগিচা বিদ্যমান।’ এখানে প্রবেশ করা মানে জান্নাতে প্রবেশ করা।

দুনিয়ার সব কবরের মধ্যে সবোর্ত্তম ও সবচেয়ে বেশি জিয়ারতের উপযুক্ত স্থান হলো- রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা মোবারক। তাই এর উদ্দেশে সফর করা উত্তম।

মসজিদে নববীতে একসঙ্গে প্রায় সাড়ে চার লাখ মুসল্লি একত্রে নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদে নববীতে মহিলাদের জন্য নামাজের স্থান সম্পূর্ণ আলাদা।

সৌদি আরবের মদিনা মুনাওয়ারা শহরের মসজিদে নববিতে প্রিয়নবী (সা.)-এর রওজা মোবারক অবস্থিত। সবুজ গম্বুজের ছায়াতলে অবস্থিত তার রওজার চতুর্দিকে সুরক্ষিতভাবে বেষ্টনী দেয়া। কোনো জিয়ারতকারীর সরাসরি তা দেখার সুযোগ নেই।

রাসুল (সা.)-এর রওজা জিয়ারত করতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিনিয়ত অসংখ্য মুসলমান ছুটে আসেন। আল্লাহর প্রিয় রাসুল (সা.)-কে সালাম জানাতে বুকভরা ভালোবাসা ও আবেগ-উচ্ছ্বাস নিয়ে তারা উপস্থিত তার রওজার কাছে।

রাসুল (সা.)-এর রওজার বর্তমান অবস্থা কেমন ও কীভাবে তা সাধারণ জিয়ারতকারীদের থেকে সংরক্ষিত রাখা হয়েছে, সে সম্পর্কে ৬টি তথ্য দেয়া হলো।

প্রবেশপথে সোনালি গ্রিলের বেষ্টনী:

রাসুল (সা.) ও তার দুই প্রিয় খলিফা আবু বকর (রা.) ও উমর (রা.)-এর রওজা ধারাবাহিকভাবে পাশাপাশি অবস্থিত।

তাদের রওজার কামরাটিতে প্রাবেশ পথে স্থায়ীভাবে সোনালি গ্রিলের বেষ্টনী দিয়ে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ফলে রাসুল (সা.)-এর রওজার কামরায় প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই।

আয়েশা (রা.)-এর ঘর:

ইন্তেকালের পর রাসুল (সা.)-কে উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.)-এর ঘরে দাফন করা হয়। অর্থাৎ যেখানে তার ইন্তেকাল হয়, সেখানেই তাকে দাফন করা হয়।

মসজিদে নববির আঙিনায় অবস্থিত ছোট ঘরটিতে রাসুল (সা.) তার স্ত্রী আয়েশাসহ (রা.) বসবাস করতেন। তার অন্যান্য স্ত্রীর কামরাও একসঙ্গে সারিবদ্ধভাবে লাগোয়া ছিল। কামরাগুলো তখন মসজিদে নববির মূল অংশ থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন ছিল। পরবর্তীতে রাসুল (সা.)-এর কবর মসজিদে নববির মূল অংশের ভেতরে সংযুক্ত করা হয়।

গ্রিলের মধ্যে তিনটি ছিদ্রপথ:

রাসুল (সা.)-এর রওজার কামরাটি চারদিক থেকে বেষ্টনী দিয়ে আবদ্ধ থাকায় রাসুল (সা.)-এর রওজা ও তার দুই সঙ্গীর কবর বাইরে থেকে দেখার কোনো সুযোগ নেই। তবে সবুজ রঙ্গের বেষ্টনীগুলো এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে কেউ খেয়াল করলে ভেতরে দেখতে পারে। পাশাপাশি কামরাটির প্রবেশপথের গ্রিলে তিনটি ছিদ্র পথ রয়েছে, যা দিয়ে রাসুল (সা.)-এর রওজা ও তার দুই সঙ্গীর কবর সরাসরি দেখা যায়। প্রথম বড় ছিদ্রপথ দিয়ে রাসুল (সা.)-এর রওজা। মাঝের ছিদ্রপথ দিয়ে আবু বকর (রা.)-এর ও শেষ ছিদ্রপথ দিয়ে উমর (রা.)-এর কবর দেখা যায়।

দেয়ালে ঘেরা:

রাসুল (সা.) এর রওজা যে কামরায়, সেটার দেয়াল কালো পাথর দিয়ে তৈরি। দেয়ালটি রাসুল (সা.) রওজা ও তার দুই সঙ্গীর কবরকে ঘিরে রেখেছে। ইসলামী ইতিহাসের অন্যতম মহান খলিফা উমর ইবনে আবদুল আজিজ (র.) ৯১ হিজরিতে দেয়ালটি নির্মাণ করেন। যাতে কেউ রাসুল (সা.)-এর রওজার ঘরে চাইলেই প্রবেশ করতে না পারে।

মাটির গভীরেও ঘেরাও দেয়া:

রাসুল (সা.)-এর রওজার চারপাশকে সুলতান নুরউদ্দিন জংকি গলিত সিসা দিয়ে আবদ্ধ করে দিয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে খ্রিস্টান ও ইহুদি দুষ্কৃতিকারীরা কবর থেকে রাসুল (সা.)-এর দেহ মুবারক চুরি করার চেষ্টা করলে সুলতান এমন গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেন। রাসুল (সা.)-এর রওজার চারপাশে মাটির গভীর থেকে এই বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে।

যেখানে ইন্তেকাল সেখানেই তার দাফন:

যে জায়গাটিতে রাসুল (সা.) ইন্তেকাল করেন, ঠিক সে জায়গায়ই তাকে দাফন করা হয়েছে। রাসুল (সা.)-এর ইন্তেকালের পর মিহরাবের কাছে নাকি জান্নাতুল বাকির কবরস্থানে দাফন করা হবে এ নিয়ে বিভিন্ন মত আসে। তখন আবু বকর (রা.) বলেন, তিনি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, নবী যেখানেই ইন্তেকাল করেন, সেখানেই তাকে দাফন করতে। আবু বকর (রা.) এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আয়েশা (রা.)-এর কামরায় এবং রাসুল (সা.)-এর শেষ শয্যার স্থানেই তাকে দাফন করা হয়।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।