মগজের আঁচল সরিয়ে দিন – দৈনিক মুক্ত বাংলা
ঢাকাশনিবার , ২৩ মার্চ ২০২৪
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি-ব্যবসা
  3. আইন ও আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আরও
  6. ইসলাম ও ধর্ম
  7. কোভিট-১৯
  8. ক্যারিয়ার
  9. খেলা
  10. জেলার খবর
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. বিনোদন
  13. মি‌ডিয়া
  14. মু‌ক্তিযুদ্ধ
  15. যোগা‌যোগ
 
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মগজের আঁচল সরিয়ে দিন

বার্তা কক্ষ
মার্চ ২৩, ২০২৪ ১২:৫২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

পান্না চৌধুরী :

“পুরুষের রেসপেক্ট” বিষয়টি খুব কনফিউজিং। আমার শাড়ির আঁচল আমাকে প্রায় গলা অবধি ঢেকে রাখে। এমন ব্লাউজ বানাই যাতে কোমরের এক সেন্টিমিটার চামড়াও দেখা না যায়। এটা আমার অভ্যেস, কেউ শেখায়নি। কিন্তু তার পরেও তো অজস্র সামাজিক শিক্ষিত পুরুষ বুকের মাপ,আকৃতি ইত্যাদি জানতে চান। হয়তো খুব বেশি ঢাকা বলেই স্পষ্ট ধারণা পান না, তাই জিজ্ঞেস করেন। “কি পরে আছ?” এই প্রশ্নকে কোন্ পোশাকে ঢাকা সম্ভব? অসংখ্য হাই প্রোফাইল যৌনাঙ্গের ছবি উপচে পড়ে ইনবক্সে। তারা “লাগাতে” চান। কোনো অনুমতির তোয়াক্কা না করেই সেক্সটিং শুরু করেন। কত প্রতিষ্ঠিত পুরুষ নিজের বিছানার একপাশে নিজস্ব মেয়েটির থেকে সামান্য দূরত্বেই অচেনা রোমাঞ্চের খোঁজ করেন নিয়মিত। কে চায় এই নৃশংস সম্মান ? সব থেকে বেশি যৌণ আক্রমণ ঘটে রাজনৈতিক কারণে। স্পষ্টবক্তা মহিলাদের তথাকথিত প্রগতিশীল লোকজনই ফ্রাস্ট্রেটেড বলে দাগিয়ে দেন। অবশ্যই ইঙ্গিত যৌনতার দিকেই। শাড়ি, কামিজ, ব্লেজার কোনো কিছুই সেই বৌদ্ধিক নগ্নতা ঢেকে রাখতে পারে না। আরো মজার বিষয় হলো, সর্বস্তরে এই ঢেকে রাখার সব দায় একমাত্র মেয়েদেরই!
আমার কতগু‌লো মে‌য়ে চি‌নি যারা নি‌জেরাই পুরু‌ষের সা‌থে যে‌চে প‌ড়ে কামাতুর কথাবার্তাবি‌লে পুরুষটা‌কে উত্তে‌জিত কর‌ছেন লাগা‌চ্ছেন শু‌চ্ছেন ক্ষ‌তি নেই ক্্িতু আপ‌নি মে‌য়ে কোন পুরু‌ষের কথা বল‌লেই আপ‌নি খারাপ তারা ধ্য়ো তুল‌সি পাতা।
মেয়েরা যৌনতা চান না, মেয়েরা উঁচুস্বরে স্পষ্ট কথা বলতে পারেন না, নিজেদের শরীরকে সাজাতে গেলে তাঁদের বেশ্যা হতে হয়, এই ধারণাগুলি অনেক পুরনো, আজকাল একটু খেলো লাগে অবশ্যই। অনেকটা ওই ‘ফিজিক্স পড়তে ব্রেন লাগে, ইতিহাস পড়তে লাগে না’, সেইরকম। পৃথিবীর সেরা পঞ্চাশ সৃষ্টিশীল ব্যক্তিত্বে মহিলাদের হাস্যকর সংখ্যাটি এই প্রোপাগান্ডারই প্রতিফলন। শহর থেকে গ্রামে, সমতল থেকে পাহাড়ে, বস্তি থেকে সমুদ্রে নগ্নতার ধারণা আমূল বদলে যায়। সবথেকে আনন্দ পেতাম যখন ভারতের গবেষণা প্রতিষ্ঠানে পড়তে আসা ইরানের মেয়েদের দেখতাম। সমস্ত মানসিক স্বাধীনতার প্রতিফলন ঘটত তাঁদের শরীরে। ওই অসামান্য উদার সৌন্দর্য, স্প্যাঘেটি টপ অ্যান্ড হট প্যান্টস, আগুনের মত লিবারেটিং লাগত। ওই কমিউনিটির কাছে রোজ লড়াই শিখি।

সুতরাং আঁচল কোথা হইতে আসিয়াছে, কোথা যাইতেছে, সেটা ফ্যাক্টর না। আঁচলের বিবর্তনে আমাদের ভূমিকা কতটা, সেটা ফ্যাক্টর। “পুরুষের রেসপেক্ট” আমরা চাই না। অন্তত আমি তো চাই না। বন্ধুত্ব চাই। ভালোবাসা চাই। সহাবস্থান চাই। যেখানে সমস্ত সাম্যের ধারণা আছে। দুই পক্ষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ চাই। এমন কত পুরুষ ঘিরে থাকেন আমাকে। আগলে রাখেন। মাঝে মাঝেই যখন মেসেজ পাই, অনেকদিন কিছু লেখেন না, লড়াই থামালে চলবে না, গান কই? অথবা শুধু দুটি শব্দ, কেমন আছেন? তখন সেই জলের মত শব্দদের জড়িয়ে থাকি। রেসপেক্ট সেই ভালোবাসারই এক সাবস্পেস। বন্ধুত্বহীন সম্মান সবথেকে ভয়ঙ্কর জিনিস। মস্তিষ্কহীন শরীরের মত। আমাদের সম্মানবোধ আমাদের আঁচল, প্যান্ট ইত্যাদি ছাড়িয়ে একদিন মস্তিষ্ক অবধি পৌঁছে যাবে, এটাই সেরিব্রাল ইক্যুইটির লড়াই। এমনটা ঘটলে এমনিতেই শরীর ও সভ্যতা সম্পর্কে ধারণা বদলে যাবে। তাই, মগজের আঁচল সরিয়ে দিন। জাইরাস, সালকাসে আলো হাওয়া আসুক। গাছেদের মত বড়ো হতে থাকুন।

# লেখক : আমে‌রিকা প্রবাসী

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।