গাড়ির হেলপার থেকে কোটিপতি হ‌য়ে‌ছে মিল্টন – দৈনিক মুক্ত বাংলা
ঢাকামঙ্গলবার , ৭ মে ২০২৪
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি-ব্যবসা
  3. আইন ও আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আরও
  6. ইসলাম ও ধর্ম
  7. কোভিট-১৯
  8. ক্যারিয়ার
  9. খেলা
  10. জেলার খবর
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. বিনোদন
  13. মি‌ডিয়া
  14. মু‌ক্তিযুদ্ধ
  15. যোগা‌যোগ
 
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গাড়ির হেলপার থেকে কোটিপতি হ‌য়ে‌ছে মিল্টন

বার্তা কক্ষ
মে ৭, ২০২৪ ৪:৩৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আরিফ নি‌শির ::

ফেসবুকে ১৬ মিলিয়নেরও বেশি ফলোয়ার নিয়ে বিখ্যাত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠেন মিল্টন। তার মানবিক কাজকর্মের জন্য প্রশংসা কুড়ান। তবে এখন তিনি আলোচনায় অন্য কারণে। গত ১ মে মিল্টনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। মিল্টনের বিরুদ্ধে তার দাতব্য সংস্থা চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৮৩৫ জন ব্যক্তির মৃত্যুসনদ জাল করার অভিযোগে আনা হয়েছে।

এছাড়া মানব পাচারের অভিযোগও রয়েছে মিল্টনের বিরুদ্ধে। যার ফলে ঢাকার একটি আদালত নতুন করে দ্বিতীয় বা‌র তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

ডেথ সার্টিফিকেট জালিয়াতির অভিযোগে তিন দিনের রিমান্ড শেষে গোয়েন্দারা তাকে আদালতে হাজির করলে ঢাকা মহানগর হাকিম শান্তা আক্তার এ আদেশ দেন।

মিল্টন সমাদ্দারের জন্ম বরিশালের একটি গ্রামে। পরে ২০১০ সা‌লের দি‌কে মিরপুরের একটি ফার্মেসিতে বিক্রয়কর্মীর কাজ করতেন। এরপর ২০১৩ সালে মিরপুরে শিশু ও বয়স্কদের জন্য একটি আশ্রয়কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে প্রশংসা অজর্ন ক‌রেন। এর পর আস্তে আস্তে সম্পদের দেখা পান মিল্টন। মানবিক কাজের জন্য তিনটি রাষ্ট্রীয় পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।

তবে সাম্প্রতিক অভিযোগগুলোতে মিল্টনের কার্যকলাপের অন্যরকম চিত্র উঠে এসেছে। সাধারণ মানুষের দান করা তহবিলের অপব্যবহার, তার তত্ত্বাবধানে থাকা মানুষদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং তার দাতব্য সংস্থার মাধ্যমে অবৈধভাবে মানব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রির অভিযোগ আনা হয়েছে মিল্টনের বিরুদ্ধে।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোতে চিকিৎসার আড়ালে মিল্টনের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পাচারে জড়িত থাকার সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে এখনও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

মিল্টন সমাদ্দারের পরিচিত স্থানীয় একটি মাদ্রাসার পরিচালক তোফাজ্জল হোসেনের একটি অভিযোগে উদ্বেগ আরও বেড়ে যায়। তোফাজ্জল বলেন, মিল্টনের আশ্রমে মারা যাওয়া কিছু ব্যক্তির মরদেহ গোসল করানোর সময় দেখা যায়, সবগুলোর শরীরে কাটা দাগ। এর জেরে আশপাশের স্থানীয় মসজিদে তার আশ্রমের মরদেহ দাফনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে অস্বীকৃতি জানানো হয়।

দাতব্য তহবিলের অপব্যবহার: 

মিল্টনের উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নে একটি সাততলা আশ্রম নির্মাণ। এর জন্য তিনি বড় অঙ্কের অনুদান ও জনসমর্থন পেয়েছিলেন।

সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম মন্ডল জানান, ১৮ মাস ধরে প্রায় ৪৫.৪০ কাঠা জমিজুড়ে নতুন আশ্রম নির্মাণের কাজ চলছে। মার্চ মাসে এর উদ্বোধন হয়ে‌ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আশ্রমটি নির্মাণের জন্য সম্ভবত বড় অঙ্কের অর্থ প্রয়োজন হয়েছিল।

নিকটবর্তী বাসিন্দা শামসুদ্দিন চৌধুরী জানান, নতুন আশ্রমের পাশে তার জমি আছে। শামসুদ্দিন দাবি করেন, মিল্টন ও তার সহযোগীরা পার্শ্ববর্তী রাস্তা দখল করেন এবং ১০ এপ্রিল তাকে হুমকি দেন। এর ফলে ১৫ এপ্রিল তিনি সাভার থানায় মামলা করেন।

বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্যমতে, মিল্টনের দুটি পৃথক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এখনও ১.২৫ কোটি টাকা রয়েছে। এ তথ্যে দাতব্য কাজের জন্য আসা অনুদান কীভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়।

গোয়েন্দা শাখার অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, মিল্টন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন যে দাতব্য তহবিলের অর্থে বিলাসবহুল জীবন যাপন করতে আরও অনুদান আনার জন্য কবরের সংখ্যা বাড়িয়ে বলতেন।

শুরু থেকেই প্রতারক:

মিল্টন বড় হয়েছেন বরিশালের উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়া ইউনিয়নে। টিবিএস তার বড় ভাই লিটন সমাদ্দারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। তিনি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।

মিল্টনের বাবা জন সমাদ্দার অনেক আগেই মারা গেছেন। পুলিশের তথ্য অনুসারে, নিজের বাবাকে মারধর করেছিলেন মিল্টন। সেই ঘটনার জেরে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেয় এলাকাবাসী। এরপর তিনি শহরে চলে যান।

মিল্টন কর্মজীবন শুরু করেন ঢাকার মিরপুর এলাকার একটি ফার্মেসিতে। কিন্তু চুরির অভিযোগে সেই চাকরি হারান। পরে তিনি একজন নার্সকে বিয়ে করেন এবং শিশু ও বয়স্কদের সেবার জন্য একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন।

এখন মিল্টনের আশ্রম সারা দেশের মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তার কাজ ও খ্যাতি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকে। গুঠিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য স্বপন হালদার গ্রেপ্তার হওয়ার আগে মিল্টনের বিরুদ্ধে আনা অপকর্মের অভিযোগগুলো সম্পর্কে অবগত ছিলেন না জানিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান।

এদিকে মনির হোসেন নামে এক ব্যক্তি দাবি করেন, চন্দ্রকান্ত মেমোরিয়াল চার্চের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে স্থানীয় চার্চ ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে মিল্টনের বিরোধ ছিল। স্থানীয়রা বলেন, ২০২০ সালে কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্য ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিল-স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া আদেশ তৈরি করেন মিল্টন।

মিল্টন একজন সাইকোপ্যাথ:

ডিবি অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেছেন, মৃত্যুসনদ জাল করার দায়ে গ্রেপ্তার মিল্টন তার আশ্রয়কেন্দ্র ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’-এ অবৈধ কাজ করছিলেন।

হারুন বলেন, মিল্টনের স্বীকারোক্তির পর তার অপারেশন থিয়েটারে ধারালো ব্লেড ও ছুরি পাওয়া গেছে। মিল্টনকে মাদক সেবনকারী ‘সাইকোপ্যাথ’ বলে উল্লেখ করেন তিনি বলেন, মিল্টন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের শরীরের অঙ্গও কেটে ফেলতেন।

হারুন বলেন, মিল্টন আর্থিক লাভের জন্য মানবিক কাজ করার মুখোশ পরেছিলেন। তিনি অসহায় মানুষকে আশ্রয় ও মৃতদের দাফন করার কথা বলে টাকা সংগ্রহ করতেন। কবর দেওয়ার সংখ্যা যত বেশি, টাকা সংগ্রহ তত বেশি হতো। এছাড়া তিনি শিশুদের ঠিকমতো চিকিৎসাসেবার দিতেন না; আশ্রমে মৃত্যুর খবরও পুলিশকে জানাতেন না।

তদন্ত অব্যাহত থাকায় ঢাকার কল্যাণপুরে মিল্টনের আশ্রয়কেন্দ্রে বিধিনিষেধ জারি করেছে ডিবি। এতে সেখানকার বাসিন্দাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে গেছে।

চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারে চার বছর কাজ করা স্টাফ সদস্য আরিফুল ইসলাম জানান, মিল্টন গ্রেপ্তার হওয়ার পর সেখানকার ২৩ জন শিশু ও বৃদ্ধ বাসিন্দা খাদ্যাভাবে রয়েছে। তবে একটি কোম্পানি সাম্প্রতিক পরিদর্শনে নিয়মিত খাবার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

আশ্রয়কেন্দ্রটির পাশের বাসিন্দা ইয়াসমিন আক্তার বলেন, মিল্টনকে ভালো মানুষ মনে করতেন, কিন্তু সম্প্রতি তিনি স্থানীয়দের সঙ্গে মিল্টনের বিরোধের কথা শোনেন। যার জেরে সংবাদমাধ্যমে তার কিডনি ব্যবসায় জড়িত থাকারও খবর এসেছে। ত‌বে কিডনী প্রতিস্থাপন সম্প‌র্কে রি‌পোর্টদটার‌দের ধার‌না নেই বল‌লেই চ‌লে। এর জন‌্য অ‌নেক আধু‌নিক অপা‌র্নে থি‌য়েটার যন্ত্রপা‌তি এবং অ‌ভিজ্ঞ চি‌কিৎসক প্রয়োজন। কিড‌নির জন‌্য ব্লাডগ্রু‌পিং ম‌্যা‌চিং ক্রস ম‌্যাচ তারপর কিড‌নি নেয়ার আয়োজন। এরকম।স্ট‌্যান্ড‌র্ডে ক্লি‌নিক মিল্ট‌নের নেই। এটা হ্সিার বশব‌র্তি হ‌য়ে অধবা শুত্রুতার জে‌রের অংশ।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।