পাঁচ বছরে না‌র্সিং ইনস্টিটিউট বেড়েছে ছয় গুণ : শিক্ষার্থী নয় গুণের বেশি – দৈনিক মুক্ত বাংলা
ঢাকারবিবার , ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি-ব্যবসা
  3. আইন ও আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আরও
  6. ইসলাম ও ধর্ম
  7. কোভিট-১৯
  8. ক্যারিয়ার
  9. খেলা
  10. জেলার খবর
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. বিনোদন
  13. মি‌ডিয়া
  14. মু‌ক্তিযুদ্ধ
  15. যোগা‌যোগ
 
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পাঁচ বছরে না‌র্সিং ইনস্টিটিউট বেড়েছে ছয় গুণ : শিক্ষার্থী নয় গুণের বেশি

সম্পাদক
সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩ ৯:০৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

নিম‌কি হো‌সেন ::

দেশে নার্সিং শিক্ষার প্রসারে বিগত কয়েক বছরে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ সময়ে সরকারি উদ্যোগে নতুন নার্সিং ইনস্টিটিউটের পাশাপাশি সাড়ে তিনশর বেশি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) তথ্য বলছে, গত পাঁচ বছরে দেশে নার্সিং ইনস্টিটিউট বেড়েছে ছয় গুণ আর শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে নয় গুণের বেশি। পাশাপাশি এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণ। স্বাস্থ্য শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা বলছেন, নার্সিং শিক্ষায় ঢালাওভাবে প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন ও শিক্ষার্থী বাড়লেও শিক্ষার মান নিশ্চিত করা হচ্ছে না

ব্যানবেইসের সর্বশেষ প্রকাশিত ২০২২ সালের শিক্ষা পরিসংখ্যানের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে দেশে সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউট রয়েছে ৬৮টি আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩৬০। গত পাঁচ বছরের শিক্ষা পরিসংখ্যানের তথ্যে দেখা যায়, ২০১৮ সালে নার্সিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল ৭১টি, শিক্ষার্থী ৪ হাজার ৪২৬ এবং শিক্ষক ছিলেন ১ হাজার ৪৮১ জন। ২০১৯ সালে নার্সিং ইনস্টিটিউট ১০৯টি, শিক্ষার্থী ২৩ হাজার ১২৫ এবং শিক্ষক ১ হাজার ৪৮১ জন। ২০২০ সালে নার্সিং ইনস্টিটিউট ৩৬১টি, শিক্ষার্থী ৪৭ হাজার ৫৬৭ এবং শিক্ষক ২ হাজার ৭১৪ জন। ২০২১ সালে প্রতিষ্ঠান ৪২৮টি, শিক্ষার্থী ৬০ হাজার ৫৩৯ এবং শিক্ষক ৩ হাজার ১৫০ জন। সর্বশেষ ২০২২ সালে নার্সিং ইনস্টিটিউটের সংখ্যা আগের বছরের অপরিবর্তিত ৪২৮টি, শিক্ষার্থী ৪২ হাজার ৪১০ এবং শিক্ষকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১৫০।

সে হিসাবে ২০১৮ সালের তুলনায় ২০২২-এ দেশে নার্সিং ইনস্টিটিউট বেড়েছে ছয় গুণ এবং নার্সিং শিক্ষার্থী বেড়েছে নয় গুণের বেশি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত পাঁচ বছরে দেশে নার্সিং প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়লেও তুলনামূলকভাবে শিক্ষার মান ও প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা বাড়েনি। এ সময়ে আনুপাতিক হারে শিক্ষকের সংখ্যা কম বেড়েছে। ব্যানবেইসের শিক্ষা পরিসংখ্যানের তথ্য বলছে, ২০১৮ সালে নার্সিং ইনস্টিটিউটগুলোয় তিনজন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক ছিলেন, ২০২২ সালে এসে ১৩ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজন শিক্ষক রয়েছেন।

ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশনের (ডব্লিউএফএমই) সাবেক জ্যেষ্ঠ পরামর্শক ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক বলেন, ‘প্রশিক্ষণের মান ভালো হলেই সেবা ভালো হবে। আমাদের দেশে নার্সিং শিক্ষার মান নিশ্চিতে একটি নীতিমালা রয়েছে। সেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর আদর্শ মান, ল্যাব সুবিধা এবং প্র্যাকটিসের জন্য হাসপাতাল নিশ্চিতের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু দেশের অধিকাংশ বেসরকারি নার্সিং কলেজ এ নীতিমালা মানছে না। ফলে নার্সিং শিক্ষার মান নষ্ট হচ্ছে। সেই সঙ্গে সেবার মান নিয়েও সংশয় তৈরি হচ্ছে।’

o

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নার্সিং শিক্ষার মান নিশ্চিতে সরকার ‘বেসরকারি পর্যায়ে নার্সিং কলেজ ও নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করার নীতিমালা’ নামে একটি বিধি ২০১৫ সালে পাস করে। নীতিমালায় বেশকিছু শর্ত রয়েছে। এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে ল্যাব কোর্সে আটজন শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক থাকবেন একজন, পর্যাপ্ত ক্লাসরুম ও ল্যাব সুবিধা নিশ্চিত, প্র্যাকটিসের জন্য ন্যূনতম ১০০ শয্যাবিশিষ্ট নিজস্ব হাসপাতাল থাকতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে নিজস্ব হাসপাতাল না থাকলে ন্যূনতম ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি থাকতে হবে।

যদিও দেশের প্রায় অর্ধেকের বেশি বেসরকারি নার্সিং প্রতিষ্ঠানে এসব শর্ত মানা হচ্ছে না। নীতিমালায় সর্বোচ্চ এক-চতুর্থাংশ খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ রাখা হলেও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগই খণ্ডকালীন শিক্ষকনির্ভর। বেসরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটের এ শর্তভঙ্গ নিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেছে স্বনামধন্য বেশ কয়েকটি বেসরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউট।

আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হসপিটাল ও সিমন্স ইউনিভার্সিটির সঙ্গে কোলাবরেশনে নার্সিং প্রশিক্ষণ প্রদানকারী আয়াত কলেজ অব নার্সিং অ্যান্ড হেলথ সায়েন্সেসের সিনিয়র প্রশাসনিক কর্মকর্তা এরশাদুল বারী বলেন, ‘দেশে সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটে শিক্ষার মান খুবই ভালো। তবে অধিকাংশ বেসরকারি নার্সিং প্রতিষ্ঠান শিক্ষার যথাযথ মান নিশ্চিত করতে পারছে না। তারা কম ব্যয় করে অধিক লাভ করতে চায়। এ কারণে নীতিমালায় যেসব শর্ত রয়েছে তার অধিকাংশই বাস্তবায়ন হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে যে পরিমাণ তদারকি প্রয়োজন সেটিও করা হয় না। আর তদারকি না থাকায় সুযোগ নিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান বছরের পর বছর মান উন্নয়নহীন শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কারণে বেসরকারি নার্সিং শিক্ষার প্রতি মানুষের এক ধরনের অনাস্থা তৈরি হয়েছে।’দেশে নার্সিং প্রতিষ্ঠানগুলোর দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর। এ বিষয়ে সংস্থাটির পরিচালক (শিক্ষা ও শৃঙ্খলা) মো. রশিদুল মান্নাফ বলেন, ‘আমরা সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটে শিক্ষার মান নিশ্চিত করেছি। এখানে পর্যাপ্ত শিক্ষক ও ল্যাব রয়েছে। তবে বেসরকারি নার্সিং কলেজ নিয়ে কিছু বলার নেই, কারণ এটি আমার আওতায় পড়ে না।’

বেসরকারির তুলনায় দেশে সরকারি নার্সিংয়ের মান ভালো রয়েছে উল্লেখ করে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাকসুরা নূর বলেন, ‘আমরা ফিলিপাইনসহ বেশ কয়েকটি দেশের কারিকুলাম পর্যালোচনা করে দেশের কারিকুলামের উন্নয়ন করছি। ভবিষ্যতে এ শিক্ষার মান আরো বাড়বে বলে আশা করছি।’

বেসরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটগুলোয় মনিটরিংয়ের অভাব রয়েছে বলেও স্বীকার করেন এ মহাপরিচালক। তিনি বলেন, ‘বেসরকারি ইনস্টিটিউটগুলো আমাদের মনিটরিংয়ের দায়িত্বে নেই। এসব প্রতিষ্ঠান মনিটরিংয়ের আওতায় আনতে যে পরিমাণ জনবল দরকার, তা আমাদের নেই। তবে বেসরকারি ইনস্টিটিউটগুলোর মান নিয়ে কিছু প্রশ্ন রয়েছে। তাই সরকারের পক্ষ থেকে এ ইনস্টিটিউটগুলোকেও মনিটরিংয়ের আওতায় আনার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।’

নার্সিং শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে চাইলে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরকে কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক। তিনি বলেন, ‘বেসরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউট অনুমোদনের আগে নীতিমালা অনুযায়ী তারা সব শর্ত পূরণ করছে কিনা সেটি নিশ্চিত হতে হবে। লাইসেন্স প্রদানের পরও তাদের মনিটরিংয়ের মধ্যে রাখতে হবে এবং কোনো প্রতিষ্ঠান যদি শর্ত যথাযথভাবে পূরণ না করে তবে তার লাইসেন্স বাতিল করতে হবে। সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর এসব বিষয়ে যখন কঠোর হবে তখন বেসরকারি ইনস্টিটিউটগুলো বাধ্য হয়ে হলেও মান নিশ্চিত করবে।’

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।