ধামরাই (ঢাকা) প্রতিবেদক ::
ঢাকার ধামরাইয়ের কালামপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসের ঘুসবাণিজ্য দেখার কেউ নেই। ক্রেতা-বিক্রেতা ও দলিল লেখকসহ সেবাগ্রহীতা সবাই যেন জিম্মি হয়ে পড়েছেন অত্র অফিসের কতিপয় ঘুসখোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে।
দলিলপ্রতি ৫-৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে আগের তুলনায় বর্তমানে দলিল সম্পাদন অনেক অংশে কমে গেছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।
সরেজমিন গেলে ভুক্তভোগীরা বলেন, উপজেলার কালামপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসের মোহাম্মদ আব্দুর রহমান ও মহরারব মালতি রানীসহ কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রকাশ্যে ঘুসবাণিজ্যে মেতে উঠেছেন। কোনো দলিল সম্পাদনের জন্য যাওয়া হলে তারা টাকা না হলে দলিল ছাড়েন না। বিষয়টি অত্র অফিসের রেজিস্ট্রার মো. আব্দুল মান্নানকে অবহিত করা হলেও কোনো প্রতিকার মিলেনি।
অফিসের ঘুসবাণিজ্য এখন অনেকটা ওপেন সিক্রেট। নামজারি না থাকলে পৈতৃক সম্পত্তি হলেও দলিলপ্রতি ২-৫ হাজার টাকা ঘুস দিতে হয় দলিল সম্পাদনের জন্য ওই ঘুসখোর কর্মকর্তা- কর্মচারিদের।
শুধু তাই নয়, দানপত্র কিংবা হেবা বেলুয়াসাফা দলিল সম্পাদন করতে গেলেও দলিলপ্রতি ৫-৭ হাজার টাকা ঘুস দিতে হয় দলিল গ্রহীতাকে। সাবরেজিস্ট্রি অফিসের ওই সব ঘুসখোরের দাবিকৃত টাকা দিলে দলিল সম্পাদন হয় আর না দিলে দলিল আটকে দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে বাথুলি গ্রামের দেওয়ান মোহাম্মদ ফজলুল হক সবুজ, বড় নারায়ণপুর গ্রামের দেওয়ান মোহাম্মদ বজলুল করিম, কামারপাড়া গ্রামের মো. আতাম মিয়া, লালুয়াকুন্ডু গ্রামের হাফিজুর রহমান ও পশ্চিম সূত্রাপুর গ্রামের মো. আব্দুল গনি সুমনসহ আরও অনেকে বলেন, আমরা কালামপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে দলিল করতে গিয়ে নানা বিড়ম্বনার শিকার হয়েছি। সব কাগজপত্র ঠিক থাকার পরও দলিলপ্রতি ৫-৭ হাজার টাকা; কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরও বেশি টাকা দিতে হয় করণিক আব্দুর রহমান মহড়া ও মালতি রানী দাসকে।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন দলিল লেখক বলেন, আমাদের পেটে লাথি পড়ে গেছে। অফিসের কতিপয় অসাধু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘুস বাণিজ্যের কারণে জমি রেজিস্ট্রি অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। ফলে আমাদের রুটি রোজগারের পথ স্তিমিত হয়ে গেছে। এর প্রতিবাদ করেও কোনো প্রতিকার মিলেনি আমাদের।
এ ব্যাপারে মো. আব্দুর রহমান বলেন, পূর্বের সিস্টেম অনুযায়ী সব রেজিস্ট্রি অফিস পরিচালিত হচ্ছে। নতুন করে কোনো নিয়মকানুন সংযোজন করিনি। পূর্বে যেভাবে টাকা-পয়সা আদায় করা হয়েছে আমিও ঠিক সেভাবেই আদায় করছি। এতে আমার কোনো দোষ নেই।
এ ব্যাপারে সাব রেজিস্ট্রার মো. আব্দুল মান্নান বলেন, অফিসে ঘুস বাণিজ্যের বিষয়টি আমার জানা নেই। তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সততা পাওয়া গেলে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।